April 30, 2024, 8:36 am
ব্রেকিং নিউজ

২৫০ টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা!

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Tuesday, April 9, 2024
  • 21 দেখা হয়েছে

শরীয়তপুরের যাত্রীদের ২৫০ টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা!

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুরের যাত্রীদের গণপরিবহণে গুনতে হচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া। প্রতিবছরই ঢাকা টু শরীয়তপুর রুটে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে বেড়ে যায় এসব বাসের ভাড়া, বিভিন্ন রকম অজুহাতে বাড়ানো হয় এই ভাড়া। এ বছরও ঈদ বকশিশ কিংবা ফিরতি ট্রিপে যাত্রী সংকট দেখিয়ে নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।

এদিকে পরিবারের সঙ্গে ঈদ কাটাতে দ্বিগুণ অর্থ দিয়েই টিকেট কাটতে বাধ্য হচ্ছে এই অঞ্চলের ঘরমুখো হাজার হাজার মানুষ।

সরেজমিনে দেখা যায়, রমজানের শুরু থেকেই ঢাকাকেন্দ্রিক বাসগুলোতে সুযোগ বুঝে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। প্রায় গত ১৫ দিন ধরে বাস ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগ উঠে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে বাস ভাড়া ততই বৃদ্ধি পায়। রাত নামলে এর মাত্রা ছাড়িয়ে যায় কয়েকগুণ। ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার জরিপ অনুযায়ী শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস যাত্রাবাড়ী থেকে জাজিরা পর্যন্ত ভাড়া নিয়েছে ৩০০ টাকা এবং শরীয়তপুর পর্যন্ত ৩৫০ টাকা। যেখানে অতিরিক্ত নিয়েছে ৫০ টাকা। এছাড়া শরীয়তপুর পরিবহণ, পদ্মা ট্রাভেলস, গ্লোরি পরিবহণ ও ফেম পরিবহণের ভাড়া ছিল ৪০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। যা এই রুটের নিয়মিত ভাড়া থেকে কিছু ক্ষেত্রে দ্বিগুণেরও বেশি।

সোমবার ঢাকা থেকে শরীয়তপুর পরিবহণে উঠেছিলেন এমদাদুর রহমান (৩৪)। তিনি জানান, যাত্রাবাড়ী থেকে বাসে উঠলেও তার থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া নিয়ে তাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে ২৯৮ টাকার।

একইদিন যাত্রাবাড়ী থেকে জাজিরার উদ্দেশ্যে বাসে ওঠেন আনোয়ার (২৬) নামের আরেক যাত্রী। তিনি জানান, নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়েছে তার থেকে। শরীয়তপুর পরিবহণে যাত্রাবাড়ী থেকে জাজিরা পর্যন্ত তাকে ভাড়া দিতে হয়েছে ৪০০ টাকা।

যদিও তথ্য বলছে, জাজিরা/কাজিরহাট পর্যন্ত বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া ২৫০ টাকা এবং শরীয়তপুর সদর পর্যন্ত ২৯৮ টাকা। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে ঢাকা টু শরীয়তপুর মুখী ভাড়া ছিল সর্বনিম্ন প্রায় ৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

জাজিরা লাউখোলার বাসিন্দা গার্মেন্টস শ্রমিক আসলাম শিকদারের (৩৫) সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সারা বছরে এই একবার বাড়ি আসি ছুটিতে। এই ঈদে পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনা-কাটা যাতায়াত খরচ সব মিলিয়ে একটা চাপ যায় আমাগো মত নিম্নআয়ের মানুষের। এর মধ্যে বাসের ২৫০ টাকার ভাড়া ৬০০ নেওয়া হয়। এইটা আমাদের জন্য জুলুম হয়ে যায়। ঈদের মতো পবিত্র উৎসবকে পুঁজি করে ব্যবসা করা অমানুষদের বিচার আল্লাহ করবে।

বিগত দিনগুলোতেও এই পরিবহণগুলোর নামে রয়েছে ভাড়া সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ। গত বুধবার শরীয়তপুর থেকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা যান ইয়াসমিন বেগম (৩৯)। মগবাজার থেকে ডাক্তার দেখিয়ে রাত ৯.৪০ মিনিটে তার ছেলেকে নিয়ে যাত্রাবাড়ী গিয়ে শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের বাসে উঠতে গেলে সেখানে সিরিয়ালে থাকা বাসটিতে সিট নেই বলে পরের বাসে উঠার অনুরোধ করেন বাসের সুপারভাইজার।

পরের বাস আসলে তিনিসহ স্ট্যান্ডে দাড়িয়ে থাকা প্রায় ৫০ জন লোক বাসে উঠার কিছু সময় পর বাসের সুপারভাইজার উঠে জানায় এটা টাইমের পরের বাস, তাই ভাড়া দিতে হবে ৩০০ টাকা করে। ভাড়া ৩০০ টাকা নিলেও টিকেট দেওয়া হয় ২৫০ টাকার। এ নিয়ে বাসে কেউ কেউ প্রতিবাদ করে উঠলে তাদের বাস থেকে জোর করে নামিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা চালানো হয়।

এ বিষয়ে শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহাম্মেদ জানান, সোশ্যাল মিডিয়া পর্যবেক্ষণে এই সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ আমরা জেনেছি। এ নিয়ে আমাদের মোবাইল কোর্ট প্রতিদিনই চলমান আছে। প্রতিদিনই আমরা টার্মিনালে যাচ্ছি। কিছুদিন আগে এটা নিয়ে আমাদের মিটিং হয়েছে, আমরা বেশ কয়েকবার বাস মালিকদের সতর্ক করেছি। মূলত আমাদের এখান থেকে যে গাড়িগুলো ছাড়া হচ্ছে সেগুলোতে কোনো অভিযোগ নেই, ঢাকা থেকে যে গাড়িগুলো ছাড়া হচ্ছে সেগুলোতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102