May 4, 2024, 1:53 am
ব্রেকিং নিউজ

খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল প্রচণ্ড গরমে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় চিংড়ি চাষে দুর্দশা

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Sunday, April 21, 2024
  • 22 দেখা হয়েছে

খুলনা প্রতিনিধি :
খুলনার উপকূলীয় অঞ্চল কয়রা উপজেলার বিভিন্ন ঘেরে মারা যাচ্ছে বাগদা চিংড়ি। এর কারণ হিসেবে চাষিরা ভাইরাস সংক্রমণের কথা বলছেন।

তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, মরা চিংড়িতে তারা কোনো রোগবালাই খুঁজে পাচ্ছেন না। প্রচণ্ড গরমে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এমন দুর্দশা। তিনি বলছেন, মৎস্য ঘেরে চিংড়ি চাষের জন্য পর্যাপ্ত পানির অভাব রয়েছে। তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রচণ্ড দাবদাহে পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। ফলে চিংড়ি মারা যাচ্ছে।

কয়রা সদর ইউনিয়নের চিংড়ি চাষি ইউপি সদস্য হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ২০০৩ সাল থেকে তিনি ঘের করছেন। এবারো ১৫ বিঘা জমিতে বাগদা চিংড়ি চাষ করেছেন। কিন্তু বছরের প্রথম থেকেই চিংড়ির পোনায় মড়ক লেগেছে। কারণ এত ভয়াবহ গরমে পানি বিষয়ে উঠার কারণে মাছ মারা যাচ্ছে। পোনা ছাড়ার ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে বেশির ভাগ পোনা মরে যাচ্ছে। তার ঘেরে পর্যাপ্ত পানি রয়েছে। তাছাড়া নিয়মিত পরিচর্যা থেকে শুরু করে পর্যাপ্ত খাদ্যও দিয়ে থাকেন। তবে রোদের কারণে কোনো হিসাব নিকাশ মিলছে না।

উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের যোগেশ মণ্ডল বলেন, তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে চিংড়ি চাষ করেছেন। বছরের প্রথমে অবমুক্ত করা বাগদা মাছ এপ্রিলের ১০ তারিখের দিকে মরে গেছে। এতে তার প্রায় দুই লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। তার এলাকার ঘেরগুলোতে পর্যাপ্ত পানি নেই বলে জানান তিনি। তা আবার প্রচণ্ড রৌদের জন্য পানি লালচে হয়ে উঠছে।

কয়রার অধিকাংশ চিংড়ি চাষি বলেন, উপজেলার বেশির ভাগ ঘেরেই গরমে কমবেশি বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। যেসব চিংড়ি অস্বাভাবিকভাবে মারা যাচ্ছে, বরফে দিলেই সেগুলোর রঙ পাল্টে যাচ্ছে এবং অপেক্ষাকৃত নরম হয়ে পড়ছে। তাই এগুলো বিক্রিও করা যাচ্ছে না।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, কয়রায় ছোট-বড় প্রায় চার হাজার মৎস্য ঘের রয়েছে। এর আয়তন প্রায় ৫ হাজার হেক্টর। এ বছর প্রায় ঘেরেই বাগদা চিংড়ি মাছই মারা যাচ্ছে। গত বছর চিংড়িতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ছয় হাজার মেট্রিক টন; কিন্তু বাগদা চিংড়ি মরে যাওয়ায় ওই লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।

কয়রা উপজেলা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক যুগান্তরকে বলেন, বাগদা চাষের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর লবণসহিষ্ণু মাত্রা হলো সর্বোচ্চ ২৫ পার্টস পার থাউস্যান্ড (পিপিটি)। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে পরিবেশের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে গেছে। পাশাপাশি চিংড়ি চাষের জন্য যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন তা ঘেরগুলোতে নেই। এ কারণে লবণাক্ততা বেড়ে গিয়ে গরমের কারণে বাগদা চিংড়ি মারা যাচ্ছে। তাছাড়া হঠাৎ বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। তাপমাত্রার এ তাৎক্ষণিক পরিবর্তনেও চিংড়ির ক্ষতি হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে চাষিদের নিয়মিত কয়রা উপজেলা মৎস্য দপ্তরের মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102