জাবি প্রতিনিধি:
চাকরি স্থায়ীকরণের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীরা।
গতকাল সোমবার (০২ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন কর্মচারীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও বিভাগে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করেন।
আজ মঙ্গলবার (০৩ জানুয়ারি) রাত ৯টা পার হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে লিখিত কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন অস্থায়ী কর্মচারীরা।
তবে আজ সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নুরুল আলমের সঙ্গে সাক্ষাতে বসে তাদের একটি প্রতিনিধি দল। এ সময় উপাচার্য পরবর্তী নিয়োগে তাদের অগ্রাধিকারের চেষ্টা করা হবে বলে মৌখিক আশ্বাস দেন। তবে তা লিখিত আকারে না পাওয়ায় কর্মচারীরা তাদের কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে, গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ ও প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল হাসান তাদের ফিরে যেতে বললে তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাবেন না বলে জানান।
কর্মচারীরা দাবি করেন, ‘তাদের সাথে কাজ করা অনেকের চাকরি স্থায়ী হলেও তাদের চাকরি স্থায়ী হয়নি। বিভিন্ন সার্কুলারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নতুন নিয়োগ দিলেও তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসন থেকে অনেকবার মৌখিক আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তাতে কাজ হয়নি। তাই এবার তাদের লিখিত আশ্বাস দিলে কাজে ফিরে যাবেন। অন্যথায় কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।’
এদিকে আমরণ অনশন কর্মসূচি চলাকালে তীব্র শীত ও অনাহারে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন পাঁচজন কর্মচারী। তারা হলেন বেগম সুফিয়া কামাল হলের হল এটেন্ডেন্ট নূর নাহার, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের হল এটেন্ডেন্ট আবু রায়হান, শহীদ রফিক-জব্বার হলের গার্ড সেলিম, শেখ হাসিনা হলের মালি শরীফুল ইসলাম ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী রিতা আক্তার। তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় জাবি মেডিকেল থেকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
অস্থায়ী কর্মচারীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কিনা এ ব্যাপারে জানতে উপাচার্যের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীরা সাক্ষাত করতে গেলে প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষার পর উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব এসে জানান তিনি ব্যস্ত থাকায় আজ সময় দিতে পারবেন না।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অফিসের তথ্যমতে, বর্তমানে তৃতীয় শ্রেণির ছয় জন ও চতুর্থ শ্রেণির ১৪৯ জন কর্মচারী ‘দৈনিক মজুরি’ ভিত্তিতে কর্মরত আছেন। তারা বিভিন্ন হল ও বিভাগে মালি, পিয়ন, ক্লিনার, হল এটেন্ডেন্ট, গার্ড পদে কাজ করেন।