May 20, 2024, 10:06 am
ব্রেকিং নিউজ

মানব পাচার কারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Monday, October 10, 2022
  • 83 দেখা হয়েছে

লতিফুর রহমান রাজু, সুনামগঞ্জ:

মানব পাচারকারী চক্রের খপ্পরে পরে লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে লিবিয়ায় এক যুবকের মৃত্যু হয়। উক্ত ঘটনায় জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীধরপাশা গ্রামের মোঃ তরিকুল ইসলাম (৪১) বাদী হয়ে শ্রীধর পাশা গ্রামের মৃত মছদ্দর আলীর পুত্র আবুল মিয়া, আবুল মিয়ার স্ত্রী আছসা বেগম, আবুল মিয়ার পুত্র আলী হোসেন ও দিরাই উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের সালেহ আহমদ কে আসামী করে মানব পাচার আইনে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানায় মামলা রুজু করেন। বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ৯ অক্টোবর এজাহার নামীয় দুই আসামী গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

জগন্নাথপুর থানা পুলিশের দুইটি টিম মামলা রুজুর পর হতে সুনামগঞ্জ জেলাসহ সিলেট জেলা ও হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে নিরবিচ্ছিন্নভাবে অভিযান পরিচালনা করে ৯ অক্টোবর হবিগঞ্জ জেলা সদরের বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন মোহনপুর নামক এলাকা হতে মামলার এজাহারনামীয় আসামী আবুল মিয়া (৫০) ও আছমা বেগম (৪০) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদের নিকট হতে ১টি ভেনিটি ব্যাগ এবং ব্যাগের ভিতর রাখা ৪ লাখ ১৫ হাজার ৫শ টাকা, ৭টি মোবাইল ফোন ১টি এটিএম কার্ড ২টি ব্যাংক চেক ১টি পাসপোর্ট জব্দ করে।

মোঃ তরিকুল ইসলাম তার ছেলের দাফন-কাফন শেষে গত ০৩/১০/২০২২ খ্রি. থানায় অভিযোগ দাখিল করলে জগন্নাথপুর থানার মামলা নং-০৫, তারিখ-০৩/১০/২০২২খ্রিঃ, ধারা-মানব পাচার আইন ২০১২ এর ৬(২)/৭/৮(১) (২)/১০ (১) তৎসহ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়। এ মামলায় দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

সুনামগঞ্জ পুলিশ মিডিয়ার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, এজাহার নামীয় আসামী আবুল মিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ তার লিবিয়া প্রবাসী পুত্র আসামী আলী হোসেনের মাধ্যমে বাদীর পুত্র একওয়ান ইসলামকে ইতালী পাঠানোর জন্য প্রলুব্ধ করে। আসামী আবুল মিয়ার পিড়াপিড়িতে বাদী তার ছেলেকে ইতালী পাঠানোর জন্য ১৯লক্ষ টাকার চুক্তিতে সম্মতি প্রকাশ করেন। উক্ত চুক্তি মোতাবেক গত ২৫/০৩/২০২১ খ্রি. বাদী ৭ লক্ষ টাকা আসামী আবুল মিয়াকে দিলে আসামী আবুল মিয়া টাকা বুঝে নিয়ে ভিজিট ভিসার মাধ্যমে বাদীর ছেলে ভিকটিম একওয়ান ইসলামকে দুবাইয়ে প্রেরণ করে। দুবাই পাঠানোর পর আসামী আবুল মিয়া গত ২৩/০৪/২০২১ খ্রি. বাদীর নিকট তার ছেলে একওয়ান ইসলামকে ইতালী পাঠানোর জন্য চুক্তি মোতাবেক আরও ৭ সাত লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। উক্ত টাকা পেয়ে ১ ও ২নং আসামীদ্বয় কৌশলে বাদীর পুত্র একওয়ান ইসলামকে ইতালী না পাঠিয়ে লিবিয়ায় অবস্থানরত তার ছেলে আসামী আলী হোসেন ও তার আত্মীয় আসামী সালেহ আহমদ এর নিকট পাঠিয়ে দেয়। ঐসময় বাদী তার ছেলের সাথে কথা বলে জানতে পারে যে, সে লিবিয়ায় আছে এবং অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছে। বাদী তার ছেলেকে ইতালিতে পাঠাতে না পারলে দেশে ফেরত আনার জন্য আসামী আবুল মিয়াকে জানায়। আসামী আবুল মিয়া পুনরায় বাদীকে আশ্বস্ত করে চুক্তির অবশিষ্ট টাকা বাদীর নিকট হতে গ্রহণ করে।

আসামীরা হঠাৎ বাদীর সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে বাদীর সন্দেহ হয় এবং তার ছেলেকে দেশে নিয়ে আসার জন্য আসামী আবুল মিয়াকে চাপ প্রয়োগ করে। এ সময় আসামীরা বিভিন্ন অজুহাতে বাদীর নিকট আরও টাকা পয়সা দাবী করে। বাদীর চাপে আসামী আবুল মিয়া একপর্যায়ে বাদীকে জানায় যে, তার ছেলে একওয়ান ইসলাম গত ১৬/০৬/২০২২ খ্রি. লিবিয়া অবস্থানকালে মৃত্যুবরণ করেছে। বাদীর ধারনা আসামী আলী হোসেন ও আসামী সালেহ আহমদ লিবিয়ায় অবস্থারত তাদের সহযোগী মাফিয়া দ্বারা বাদীর ছেলে একওয়ান ইসলামকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং ঠিকমতো খাবার না দিয়ে মারধর করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।

পরবর্তীতে বাদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় গত ২৯/০৯/২০২২ খ্রি. তার ছেলে একওয়ান ইসলাম এর মৃতদেহ দেশে নিয়ে আসে। গত ৩০/০৯/২০২২ খ্রি. বাদী তার ছেলে একওয়ান ইসলাম এর মৃতদেহ ও মৃত্যু সংক্রান্ত কাগজপত্রাদি গ্রহন করে জগন্নাথপুর থানায় নিয়ে আসলে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102