টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:নিয়মিত ট্রেন চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হলো যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম নবনির্মিত ‘যমুনা রেল সেতু’।আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টায় সেতুতে ওঠে ট্রেন। সাড়ে তিন মিনিটে সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জ অংশে পৌঁছায় ট্রেনটি।
এর আগে পৌনে ১২টার দিকে সেতুর পূর্ব পাশে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন এলাকায় ফলক উন্মোচন, ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব এম ফাহিমুল ইসলাম সেতুটির উদ্বোধন করেন।
এর ফলে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হলো। বিশেষ করে উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলের সঙ্গে ঢাকার রেল যোগাযোগ আরও সহজ হলো। এতে বাংলাদেশর সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলো। তবে ডাবল লেনের হলেও বর্তমানে সিঙ্গেল লেন চালু হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল সহসাই মিলছে না যাত্রীদের।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক এম আফজাল হোসেনের সভাপতিত্ব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচি এবং জাপানের বৈদেশিক উন্নয়ন সংস্থা জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক মহা-পরিচালক ইতো তেরুয়ুকি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান।
উদ্বোধন শেষে ট্রেনের অতিথি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জের পশ্চিম প্রান্তে সায়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে যান। সেখানে সংবাদ সম্মেলন শেষে পুনরায় সেতুর পূর্ব প্রান্তে ফিরে আসবেন।
উল্লেখ্য, সেতুটি ৫০টি পিলার এবং ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত। নতুন রেলওয়ে সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত। দেশের দীর্ঘতম ও আধুনিক এই সেতুর ওপর দিয়ে দিনে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারবে।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী থেকে সিল্ক সিটি এক্সপ্রেস ট্রেন প্রথমবারের মতো যাত্রী নিয়ে যমুনা রেল সেতু পার হয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চালানোর সময় একটি ট্রেন ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে সেতুটি অতিক্রম করেছিল। এতে সেতুটি পাড়ি দিতে সময় লেগেছিল প্রায় সাড়ে ৩ মিনিট।
সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ সরকার দিয়েছে। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।
২০২০ সালে সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয় এবং ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিং কাজ শুরু হয়। ৪.৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেল সেতু দেশের দীর্ঘতম প্রথম ডাবল ট্রাকের ডুয়েল গেজের সেতু।
১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় ৩৮টি ট্রেন প্রতিদিন তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে যাতায়াত করে।