আন্তর্জাতিক ডেস্ক:মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি সেনা দপ্তর দখলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। সামরিক জান্তার জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য ধাক্কা বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরাকান আর্মি দাবি করেছে, কয়েক সপ্তাহের তীব্র লড়াইয়ের পর গতকাল শুক্রবার আরাকান আর্মি (এএ) পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কমান্ড ‘সম্পূর্ণভাবে দখল’ করেছে।
মিয়ানমারে গত পাঁচ মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড দখলের ঘটনা। এর আগে গত আগস্টে উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যের লাশিও শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহী জোট। ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর সেটি ছিল মিয়ানমারের ইতিহাসে প্রথম কোনো আঞ্চলিক সামরিক কমান্ড দখল।
দেশজুড়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ১৪টি আঞ্চলিক কমান্ড রয়েছে। এসবের মধ্যে বেশিরভাগই সুসংগঠিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী বা ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের’ সঙ্গে লড়াই করছে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছেন এএফপি।
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অসংখ্য জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে যারা স্বাধীনতার পর থেকে স্বায়ত্তশাসন এবং সম্পদের নিয়ন্ত্রণের জন্য সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। গত মাসে জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়েছিল, ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের কারণে বাণিজ্য ও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে রাখাইন রাজ্য।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চিকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাই। এরপর থেকে দেশটিতে গণতন্ত্রপন্থিদের ওপর নিপীড়ন এবং অভ্যন্তরীণ সংঘাত বেড়েই চলছে। প্রায় প্রতিদিনই সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ গ্রুপগুলোর লড়াই হচ্ছে। সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশটিতে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
গত নভেম্বরে আরাকান আর্মি ও জান্তার মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পর রাখাইনে নতুন করে লড়াই শুরু হয় জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে। ধারাবাহিকভাবে বেশ কয়েকটি অভিযানে জয় পেয়েছে বিদ্রোহীরা।