শেরপুর প্রতিনিধি:শেরপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ৫ উপজেলার প্রায় ২২টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। এছাড়া নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতীতে বন্যার পানিতে ডুবে দুই সহোদরসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন- নালিতাবাড়ী খলিশাকুড়ির খলিলুর রহমান (৬৫), আন্ধারুপাড়ার ইদ্রিস আলী (৬৬), নিশ্চিন্তপুর কুতুবাকুড়া গ্রামের দুই ভাই আলম (১৭) ও হাতেম (৩০), বাঘবেড় বালুরচরের ওমেজা বেওয়া। এছাড়া ঝিনাইগাতীর সন্ধাকুড়া থেকে অজ্ঞাতনামা একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছানোয়ার হোসেন এসব মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, নকলা, শ্রীবদরদী ও শেরপুর সদরের ২২টি ইউনিয়নে দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। বেশ কিছু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে অনেক জায়গা বসতবাড়ি ঘর ধসে গেছে এবং শস্য ও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সবচেয়ে ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব এলাকায় এখনো পানিবন্দি হয়ে আছেন হাজারও মানুষ। তাদের উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবীরা। তবে পানির প্রবল স্রোত আর পর্যাপ্ত নৌযানের অভাবে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানান তারা।
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানান, ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে গত কয়েক দিনে। এসব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা করে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ভোগাই নদীর নাকুগাঁও পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, নালিতাবাড়ী পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার এবং চেল্লাখালীর ২৪৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অপর দুটি পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি এখনো বিপৎসীমার সমান রয়েছে। এছাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে ব্রহ্মপুত্র, মৃগী ও দশানী নদীর পানি।
বন্যা পরিস্থিতি ব্যাপারে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান বলেন, সোমবারের ভেতর কমবে সব নদীর পানি, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।