অনলাইন ডেস্ক :
ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি করে শেখ হাসিনা এবং তার খুনি মন্ত্রিসভার সদস্যদের ধরে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় খুলনা মহানগরীর ডাকবাংলা সোনালী ব্যাংক চত্বরে গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মামুনুল হক বলেন, ১৯৭৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল, ১৫ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ৫০ বছরের রাজনীতি ছিল প্রতিশোধের রাজনীতি। বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে তিনি প্রতিশোধ গ্রহণ করেছেন। এদেশের মানুষ যেন মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থা তিনি করেছেন। দেশটা যেন তলাবিহীন ঝুড়িতে রূপান্তরিত হয় সেই ব্যবস্থা তিনি করেছেন। আমার কাছে আশ্চর্য লাগে- একটা বিধবা নারীর কত টাকা লাগে? লক্ষ কোটি টাকা আমার গরিব দেশ থেকে পাচার করল। দেশের শ্রমিকরা মেহনত করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বিদেশ থেকে আমাদের ছেলেরা-মেয়েরা কষ্টার্জিত পয়সা দেশে পাঠায়। আর আশা করে বাংলাদেশ উন্নত হবে। তোমরা মেগা মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করে বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিতকে ধসিয়ে দিলে। আসলে তাদের এত টাকার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু চুরি করেছে শুধু এই জন্য যেন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে। বাংলাদেশটাকে আরেকটা দেশের অঙ্গরাজ্যে পরিণত করার চক্রান্ত করেছে। তিনি বলেন, ২০১৩ সালে আমার ভাইদেরকে হত্যা করা হয়েছে, ২০০৯ সালে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, ২০২১ সালে আমাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদেরকে নির্বিচারে জেলখানায় ভরে রাখা হয়েছে। ২০২৪ সালে আমাদের ছেলে-মেয়েদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে মামুনুল হক বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করেছেন, সেই ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন নিয়োগ দিয়েছেন। এজন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এটার কাজ দ্রুত চালাতে হবে। শেখ হাসিনা কোন বলে, কোন যুক্তির বলে এখনো পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নিয়ে আছে। এতোগুলো মামলার আসামি হওয়ার পর এখনো তার নামে কেন ইন্টারপোলের রেড এলার্ট জারি হলো না। ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি করে শেখ হাসিনা এবং তার খুনি মন্ত্রিসভার সদস্যদের ধরে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। তার আগে শেখ হাসিনাকে রিমান্ডে নিয়ে কোথায় কোথায় টাকা পাচার করেছে সব উদ্ধার করতে হবে। পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে এনে দেশের মানুষের কল্যাণে বিনিয়োগ করতে হবে।
খেলাফত মজলিসের খুলনা মহানগর ও জেলা শাখা এ গণসমাবেশের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খেলাফত মজলিসের অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা রফিকুর রহমান। গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খেলাফত মজলিসের খুলনা জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা মুজিবর রহমান। সমাবেশে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন। এতে ইসলামী আন্দোলনের নেতা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।