এখন প্রতিনিয়তই দেখা যায় কম বয়সিদেরও ডায়াবেটিস হচ্ছে। এমনকি সদ্যোজাত শিশুও বাদ এ থেকে বাদ যাচ্ছে না। ডায়াবেটিস রোগীদেরই হার্টে ব্লক, হার্টঅ্যাটাক, হার্ট ফেলিওরের মতো অসুখের সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এ বিষয়ে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের হৃদরোগ চিকিৎসক দিলীপ কুমার বলেছেন, হার্টের রোগের আরও একটি কারণ হলো ডায়াবেটিস। কারণ অল্প বয়সিদেরও ডায়াবেটিস হচ্ছে। এমনকি সদ্যোজাত শিশুও বাদ যায় না এ রোগ থেকে। ডায়াবেটিসজনিত হার্টের অসুখের নাম হলো— ‘ডায়াবেটিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি’।
চিকিৎসকের ভাষায়— ডায়াবেটিসের রোগীর মৃত্যু সব সময়েই যে রক্তে শর্করা বাড়া বা কমার জন্য হবে, তা কিন্তু নয়; অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রাণসংশয়ের ঝুঁকি বাড়ে ডায়াবেটিসের জন্য। ডায়াবেটিসের রোগীর যদি রক্তে শর্করার মাত্রা যদি বাড়তে থাকে, তা হলে হার্টের কাজ করার ক্ষমতা ২০-২৫ শতাংশ কমে যায়। হার্ট দুর্বল হয়ে পড়ে।এবং মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ে।
কার্ডিওমায়োপ্যাথি হলো হৃদপেশির রোগ। হৃৎপিণ্ডের পেশিতে প্রদাহ হয়। হৃদরোগ চিকিৎসক দিলীপ কুমার জানাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে হদপেশি শক্ত হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা তৈরি করে। ফলে হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যায়। হার্ট ঠিকমতো রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করতে পারে না। তখন ‘কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ হতে পারে। হৃদযন্ত্র হঠাৎ করে শরীরে রক্ত সরবরাহ করা বন্ধ করে দেয়। ফলে শরীরের কোষে কোষে তো বটেই, মস্তিষ্কেও অক্সিজেন পৌঁছতে পারে না। তখন রোগীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বুকে ব্যথা, মাথা ঘোরা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়।
ডায়াবেটিসের রোগীদের আরও একটি সমস্যা হচ্ছে ‘অ্যাথেরোসক্লেরোসিস’ হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে। এ ক্ষেত্রে ধমনীর দেয়ালের মধ্যে চর্বি, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য পদার্থ জমতে থাকে। একে বলে ‘প্লাক’। এর ফলে ধমনী সংকীর্ণ হয়ে রক্তপ্রবাহকে বাধা দিতে পারে। তখন হার্টঅ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
ডা. দিলীপ কুমার জানান, ডায়াবেটিসের রোগীদের নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ছে, না কি কমছে। সেই সঙ্গে বছরে অন্তত একবার হার্টের চেকআপ করিয়ে নিতে হবে। ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় হলো স্থূলতা ও লিপিড লেভেলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। যদি খারাপ কোলেস্টেরলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়, তা হলেই হার্টের রোগের সম্ভাবনা অনেকখানি কমে যাবে।