April 26, 2024, 1:36 pm
ব্রেকিং নিউজ

ভয়ে খেরসন ছাড়ছে বাসিন্দারা

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Thursday, December 29, 2022
  • 83 দেখা হয়েছে

যুদ্ধ বন্ধে সাড়া না পেয়ে ইউক্রেনে হামলা জোরদার করেছে রাশিয়া। বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় ৩৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে খেরসনে। ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা। এপি। খেরসনের ট্রেন স্টেশনে দেখা গেছে-১৩ বছর বয়সি নিকা সেলিবানোভা দুই হাত উঁচিয়ে ‘হার্ট শেপ’ দেখিয়ে বন্ধুকে বিদায় জানাচ্ছে। এ সময় তার বন্ধু ইন্নাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। এর আগে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদে দুই বন্ধু। নিকার কোলে থাকা পোষ্য কুকুরটিকেও আদর করে দেয় ইন্না। নিকার মা এলেনা বলেন, ‘আগে যেখানে দিনে ১০ বারের মতো হামলার শব্দ শোনা যেত, এখন সেখানে ৭০ থেকে ৮০ বারে দাঁড়িয়েছে। আতঙ্কেই শহর ছাড়ছি। ইউক্রেন এবং আমার প্রিয় শহর খেরসনকে অনেক ভালোবাসি, তবুও ছেড়ে যেতে হচ্ছে।’ তাদের মতো আরও অনেক বাসিন্দাকে বিমর্ষ চিত্তে শহরটি ছাড়তে দেখা যায়। পরিস্থিতি এতটাই অনিশ্চিত যে অনেকে জানেন না আর ফিরে আসা হবে কিনা খেরসনে। বড়দিনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৪শ-এর বেশি বেসামরিক খেরসন ছেড়ে যায়। শহরটিতে রুশ সামরিক বাহিনীর বোমা হামলার পরই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার সেখানকার একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে হামলা চালানো হয়। যদিও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অনেকেই শহর ছাড়ছেন নিজ ব্যবস্থায়। আবার অনেকে ইউক্রেন সরকারের উদ্ধার কার্যক্রমে অংশ হিসাবে ট্রেনে করে খেরসন ছাড়ছে। স্টেশনে মানুষের লম্বা লাইন পড়ে যায়। এছাড়া সড়কেও দেখা যায় গাড়ির দীর্ঘ সারি।
ADVERTISEMENT

দাম বেঁধে দেওয়া দেশে তেল বিক্রি নিষেধ : তেলের মূল্য বেঁধে দেওয়ার পালটা জবাব দিয়েছে মস্কো। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মূল্যসীমা আরোপকারী দেশগুলোতে অপরিশোধিত তেল ও জ্বালানি পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করেছেন। আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী পাঁচ মাস এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। মঙ্গলবার এক নির্বাহী আদেশে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন পুতিন। রাশিয়ার সরকারি পোর্টাল ও ক্রেমলিনের ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন আদেশ অনুযায়ী, তেল ও তেলজাত পণ্যের ওপর মূল্যসীমা আরোপের সুযোগ অথবা উল্লেখ থাকে এমন কোনো বিক্রয় ও সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল ও জ্বালানি পণ্য কিনতে আগ্রহী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মূল্যসীমা আরোপের কথা চুক্তিতে উল্লেখ করলে রুশ তেল রপ্তানিকারক কোম্পানিগুলোকে ওই চুক্তি স্বাক্ষরে বারণ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এর আগে ৫ ডিসেম্বর শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও অস্ট্রেলিয়া এক ঘোষণায় রাশিয়া থেকে সমুদ্রপথে রপ্তানিকৃত তেলের সর্বোচ্চ মূল্য প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলারে বেঁধে দেওয়ার কথা জানায়। ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধসক্ষমতা কমাতে এ মূল্যসীমা আরোপ হয়েছে বলে পশ্চিমা দেশগুলো জানায়। পুতিনের আদেশে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও বিদেশি দেশগুলো এবং তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়া আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো অবন্ধুসুলভ ও আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার সরাসরি জবাব হিসাবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে অপরিশোধিত জ্বালানি ও তেলজাত পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, সরবরাহ চুক্তিতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে এমন ব্যক্তি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে রাশিয়ার তেল ও তেলজাত পণ্য সরবরাহ নিষিদ্ধ। দাম বেঁধে দেওয়া পক্ষগুলোর কাছে অপরিশোধিত তেল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। তবে তেলজাত বা পেট্রোলিয়াম পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময় রুশ সরকার নির্ধারণ করবে। আরও পরের কোনো তারিখে ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে পারে। অপরিশোধিত তেলের দাম বেঁধে দেওয়ায় রপ্তানি আয় হ্রাস এবং ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যয়বৃদ্ধির কারণে বাজেট ঘাটতি বেড়েছে বলে অনেকের ধারণা। তবে কোনো কোনো বিশ্লেষক মনে করছেন, দাম বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি রাশিয়ার তেল রপ্তানিজনিত আয়ে আশু প্রভাব ফেলবে না। মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে রাশিয়ার অর্থমন্ত্রী আন্ত সিলুয়ানভ বলেছেন, ‘২০২৩ সালে রাশিয়ার বাজেট ঘাটতি ডিজিপির ২ শতাংশের চেয়ে বেশি হবে।’ বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ৬,৮৮৪ : ইউক্রেনে হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিস (ওয়েইচসিএইচআর)। তথ্যানুসারে এবছর ২৪ ফ্রেব্রুয়ারি রাশিয়ার আগ্রাসনের পর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ হাজার ৮৩১ টি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা দাড়িয়েছে মোট ৬,৮৮৪ জন। যার মধ্যে ২,৭১৯ জন পুরুষ এবং ১,৮৩২ জন নারী। ১৭৫ জন মেয়ে এবং ২১৬ জন ছেলে। শিশুর সংখ্যা ৩৮ জন। মৃতদের মধ্যে ১,৯০৪ জন প্রাপ্তবয়স্কও আছেন যাদের লিঙ্গ পরিচয় জানা যায়নি। আহত হয়েছে মোট ১০,৯৪৭ জন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই দোনেস্ক এবং লুহানস্ক অঞ্চলের। এই অঞ্চলগুলোতে নিহতের সংখ্যা ৪,০৫২ জন। আহত ৫,৬৪৩। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি হতে পারে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘ।

আক্রমনের শুরু থেকে ইউক্রেনের ৭০০টির বেশি জরুরী অবকাঠামো ধ্বংস করেছে রুশ সেনারা।

জেলেনস্কির ১০ দফা শান্তি পরিকল্পনা

* বিকিরণ এবং পারমাণবিক নিরাপত্তা। অধিকৃত ঝাপোরিজঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার।

* শস্য রপ্তানি সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

* শক্তি সুরক্ষা। রাশিয়ার শক্তি সংস্থানগুলোর মূল্য সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ। ক্ষতিগ্রস্ত জ্বালানি অবকাঠামো পুনরুদ্ধার।

* যুদ্ধবন্দিসহ নির্বাসিত শিশুদের মুক্তি।

* আঞ্চলিক অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার

* সেনা প্রত্যাহার এবং শত্রুতা বন্ধ করা। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় সীমানা পুনরুদ্ধার করা।

* রাশিয়ার যুদ্ধাপরাধের বিচারে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা এবং ন্যায়বিচার।

* পরিবেশের সুরক্ষা, ইকোসাইড প্রতিরোধ, জল শোধন সুবিধা পুনরুদ্ধার।

* ইউরো-আটলান্টিক মহাকাশে সংঘাতের বৃদ্ধি প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

* নথি স্বাক্ষরসহ যুদ্ধসমাপ্তির নিশ্চিতকরণ।

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102