ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে বসে প্রধান শিক্ষক ধূমপান করছেন এমন কিছু ছবি সাম্প্রতিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা। একই সঙ্গে এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
এমন বিতর্কিত কাজ করেছেন ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার ধানীখোলা ইউনিয়নের কাটাখালী উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফাজ উদ্দিন।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আফাজ উদ্দিন প্রায় সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসেই ধূমপান করেন। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরাও। কাণ্ডজ্ঞানহীন এমন ঘটনায় তার নীতি-নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অভিভাবক ও সচেতন মহল।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘ছবিগুলো ২০২১-২২ সালের। ওই সময়ে যার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিল সে ধারণ করে। এখন আমার সাথে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে।’
স্থানীয় রুবায়েত মিল্লাত বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেন, ‘একজন প্রধান শিক্ষক যদি এমন কাজ করেন, তাহলে ছাত্র-ছাত্রীরা কি শিখবে উনার কাছ থেকে। দ্রুত প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি’।
আইয়ুব আলী নামের আরেকজন বলেন, ‘কাটাখালি উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চরিত্র বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে চলমান। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উনার কাছ থেকে কি শিক্ষা আশা করতে পারে? আপনাদের উপরেই ছেড়ে দিলাম’।
মাহাবুল হাসান নাঈম লিখেন, ‘কাটাখালী উমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়ে অফিসের টেবিল যেন উনার ধোঁয়া ছড়ানোর মঞ্চ! নীতি-নৈতিকতার কথা বাদ দিন, উনার চরিত্রের গন্ধও আজ ধোঁয়ার সাথে মিলিয়ে গেছে। একজন প্রধান শিক্ষকের আসনে বসে উনি যেন অপমানের এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এ রকম লজ্জার ছাপ নিয়ে কোন মুখে উনি শিক্ষক পরিচয় দেন। ভাবতেই গা ঘিন ঘিন করে।’
এ বিষয়ে ত্রিশাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মফিজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিষয়টি ছবিতে দেখেছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন কাজ গর্হিত অপরাধ। বিষয়টি অধিকতর অপরাধ জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল বাকিউল বারী জানান, তামাকজাত দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে ধূমপান করার কোন সুযোগ নেই। কেউ প্রকাশ্যে ধূমপান করলে তাকে আইন অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আসতে হবে। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে একজন প্রধান শিক্ষক হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের কাছে আইডল। কোন শিক্ষক বিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে ধূমপান করলে তিনি অন্যায় করেছেন। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।