লতিফুর রহমান রাজু.সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছন নগর এসপির বাংলার পাশের একটি বাসা থেকে মা ও ছেলের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ সকালে উদ্ধার করেছে সদর মডেল থানা পুলিশ। লন্ডন প্রবাসী আলকাছ মিয়ার বাসায় ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে।
নিহতরা হলেন, সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার বসিয়া খাওরী গ্রামের মৃত জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৫) ছেলে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মিনহাজ (২০)।
নিহত ফরিদা বেগমের ঝায়ের ছেলে সজিব আহমদ জানান, আমার চাচা মৃত্যুবরণ করার পর চাচি ছোট ভাইকে নিয়ে মেয়ের জামাইয়ের বাসায় বসবাস করতেন। বাসায় দুটি ইউনিট ছিল। একটি ইউনিটে চাচি ও ছোট ভাই থাকতেন। অন্য ইউনিটে চাচির খালাতো বোন নার্গিস আক্তার দুই ছেলে ফয়সাল আহমদ (৩৫) ও ফাহমিদ আহমদ (১৮)কে নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার পর থেকেই তাদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না।
নার্গিস আক্তার নিহতের ক্ষত বিক্ষত মরদেহ দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়লে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে সূস্হ না হওয়া পর্যন্ত কোন তথ্য জানা যাচ্ছে না । নার্গিস আক্তারের দুই ছেলের ও কোন হদিস মিলছেনা । বড় ছেলে ফয়সাল মাদকাসক্ত ছিল বলে স্হাণীয়রা জানান।
এ ঘটনায় সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার আ.ফ.ম আনোয়ার হোসেন খান ,৬১ ইষ্টবেঙ্গল রেজিমেন্ট অধিনায়ক মেজর মহিউদ্দিন ফারুকী সি আইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইকুল ইসলাম,সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো নাজমুল হক, ডিবি ওসি সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি গণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, দীর্ঘ প্রায় ৭/৮ বছর আগে নিহতের স্বামী জাহিদুল ইসলাম মারা যাওয়ার পর শহরের ময়নার পয়েন্টের বাসা বিক্রি করে লন্ডন প্রবাসী বিয়াই আলকাছ মিয়ার বাসায় মা ও ছেলে বসবাস করে আসছেন।
নিহতের কাজের বুয়া একই এলাকার সুন্দর আলীর স্ত্রী নুর জাহান বেগম জানান, আমি প্রায় ৪/৫ বছর যাবৎ তাদের বাসায় ঝিয়ের কাজ করছি। প্রতিদিন সকাল ৮ টায় নিহত ফরিদা বেগম মূল গেইটের তালা খোলে দিলে আমি বাসায় ঢুকে কাজ করতাম এবং কাজ শেষে বের হওয়ার পর আবার গেইট লক করতেন। কিন্তু আজ সকাল ৮ টায় আমি গেইটে শব্দ করে ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত হয়ে বাসার পিছনে গিয়ে জানালা খোলে দেখি রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মরদেহ ফ্লোরে পড়ে আছে। এই অবস্থা দেখে আমি দৌড়ে গিয়ে তাদের আত্নীয় স্বজনকে জানাই।
পুলিশ সুপার আ.ফ.ম. আনোয়ার হোসেন খান বলেন, খুনিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আশা করি খুব শীঘ্রই রহস্য উদঘাটন হবে এবং এর সাথে জড়িতরা ও ধরা পড়বে।
সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইকুল ইসলাম জানান, আমি এবং আমার দুই জন ইন্সপেক্টর সহ একটি টীম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্য গণ আসলে তদন্তপুর্বক বিস্তারিত জানা যাবে।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো নাজমুল হক বলেন, আমরা সকালে খুনের ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলেই এসে কাজ শুরু করি। আমার ধারণা বটি দা দিয়ে কুপিয়ে মা ছেলেকে খুন করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের কারণে এমন ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।