সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জে দুটি ধর্ষণ ও ধর্ষণ চেষ্টা মামলার ৫ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও একলাখ টাকা জরিমানা করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক মোঃ জাকির হোসেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টায় আসামীদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রাপ্তরা হলেন বিশ^ম্ভরপুর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেন খোকন, তাহিরপুর উপজেলার সাহিদাবাদ গ্রামের শফি উল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিউল, ছাতক উপজেলার মোহনপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন। এছাড়া চলন্ত বাসে কলেজ ছাত্রী ধর্ষণ চেষ্টা মামলা আসামি বাস চালক শহীদ মিয়াকে ৫ বছরের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আদালত সুত্রে জানাযায়, ২০১২ সালের আগস্ট মাসে বিশ^ম্ভরপুর দীগেন্দ্র বর্মণ ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ও একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মীকে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় আনোয়ার হোসেন জোরপুর্বক মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গিয়ে তাহিরপুর উপজেলার লাউরেরগড় এলাকায় ধর্ষণ করে। পরে আনোয়ারকে বেঁধে রেখে সাহিদাবাদ গ্রামের শফি উল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিউল মেয়েটি জোরপুর্বক গণধর্ষণ ভিডিও ধারন করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামি করে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করলে এই মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও ৪ জনকে খালাস প্রদান করে আদালত। বাকি তিনজন আসামীর নাম তদন্তে প্রমাণিত না হওয়ায় পুলিশের অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়। আরেকটি মামলায় ২০১২ সালের ১৭ মার্চ ছাতক উপজেলার মাহনপুর গ্রামের তের বছরের কিশোরীকে রাতে ইকবাল ও জয়নাল আবেদীন জোরপুর্বক অপহরণ করে সিলেটে নিয়ে যায়। সেখানে আসামি ইকবাল হোসেন মেয়েটিকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এঘটনায় নির্যাতিতার চাচা চমক আলী বাদী হয়ে ছাতক থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি ইকবাল হোসেনকে যাবজ্জীবন ও জয়নাল আবেদীনকে ১৪ বছরের কারাদন্ড প্রদান করেন। অন্যদিকে দিরাই পৌর এলাকার তরুনী সিলেটের লামাকাজীর বোন জামাইয়ের বাড়ি থেকে পাবলিক বাসে চড়ে দিরাই আসার সময় হেল্পার ও কন্ডাক্টরের সহযোগিতায় জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে বাস চালক শহিদ মিয়া। পরে মেয়েটি সম্ভ্রম রক্ষার জন্য চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। এঘটনায় দিরাইয়ে সুশীল সমাজ রাজপথে আন্দোলন করেন। ওই মামলায় বাস চালককে ৫ বছরের কারাদন্ড ও কন্ডাক্টর রশিদ আহমদ কে খালাস প্রদান করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের পিপি নান্টু রায় বলেন আদালতে বাদী পক্ষরা ন্যায় বিচার পেয়েছেন। আসামী পক্ষের আইনজীবী আব্দুল খালেক বলেন আদালতে আসামি পক্ষ ন্যায় বিচার পায়নি, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।