রাজশাহী প্রতিনিধি:
সিএনজি চালক ও বাস ড্রাইভার আর শ্রমিকদের সংঘর্ষের সূত্র ধরে রাজশাহীর তানোর রুটে দুই দিন ধরে বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল।গত সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত কোনো ধরনের বাস কিংবা সিএনজি এ রুটে চলাচল করতে দেখা যায়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
অভিযোগ ও তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত ২৫ নভেম্বর থেকে তানোর রুটের পবা উপজেলার বাগধানী নামক স্থানে সিএনজি চলাচল বন্ধ করে চালকদের মারধর করে বাসমালিক আর শ্রমিক সংগঠনের লোকজন। এতে নিরুপায় হয়ে সিএনজিচালকরা জেলার পবা থানার ওসি, জেলার এসপি আর ডিসি বরাবর অভিযোগ দেন।
এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীকে অবহিত করেন সিএনজি চালকরা; কিন্তু এতদিনেও কোনো সুরহা হয়নি। ফলে সিএনজি বন্ধ থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে পথে বসেছেন চালকরা।
সোমবার দুপুরে তানোর ফায়ার সার্ভিস ও থানা মোড়ে উভয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। ফলে অন্তত ৫ জন বাস শ্রমিক আহত হন। আহতরা হলেন- বাসচালক স্বপন আলী, বাবর, শাহীন, নুরুজ্জামান ও সুপারভাইজার জিয়া।
পরে আমনুরা থেকে ছেড়ে আসা বেশ কয়েকটি বাস থানা মোড়ে অবস্থান নিলে হৈচৈ করে ড্রাইভার ও হেলপাররা। এহেন পরিস্থিতিতে বাস শ্রমিকের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগের সূত্রধরে সিএনজি চালক কুদরত আলী (৫০), শাহীন (৩৫) ও নবাব আলীকে (৪০) থানা পুলিশ আটক করে।
এ ঘটনার সূত্রধরে রাজশাহী থেকে সকল রুটে চলাচল বন্ধ করে দেয় বাসের শ্রমিকরা। একই সাথে সিরোইল বাস টার্মিনালের সামনের সড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা এলোমেলো করে বাস রেখে সড়ক বন্ধ করে দেয়। এমন ঘটনার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, বিষয়টি সুরহা না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা বাস ছাড়ছে না। রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস বন্ধ আছে। শুধু বাইরে থেকে আসা বাস চলে যাচ্ছে।
বাস শ্রমিকরা জানান, রাজশাহীতে বিআরটিএর অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে শতাধিক সিএনজি চলাচল করছে। এ বিষয়ে বাস মালিক ও শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বারবার অভিযোগ করা হলেও পুলিশ কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এর ওপর তারা উল্টো বাস শ্রমিকদের মারপিট করে আহত করেছে।
এ ব্যাপারে সিএনজি চালকরা বলেছেন, বৈধ কাগজপত্র নিয়ে রাস্তায় সিএনজি চালাই। এরপরও বাস ড্রাইভার ও হেলপাররা তাদের সিএনজি চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে তানোর থানার ওসি মিজানুর রহমান মিজান বলেন, বাস শ্রমিক ও সিএনজি চালকদের সমস্যা পুরোনো। এরা শহরে গেলে তাদের সিএনজি আটকানো হয়। এরা তখন তানোরে বাসের চালক-হেলপারদের দাপট দেখায়। যাত্রী নামিয়ে নেওয়ার জের ধরে তানোর ফায়ার সার্ভিস মোড়ে এ মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান ওসি।