অনলাইন ডেস্ক:
সালিশি বৈঠকে রাজিব হোসেন নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীপুর বাজারে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এসময় আরো ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন নবীপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোজাফ্ফর হোসেন(৫০), তার ছেলে আক্তার হোসেন(৩০) ও জসিম উদ্দিন(৫৫)। লাশ ময়না তদন্তের জন্য শুক্রবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে মারুফ (১৯) নামের একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।
আহত আক্তারের স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান, তার ননদ নিলুফা বেগম উপজেলার যাত্রাপুর গ্রামের শিরিনা বেগম থেকে ১০ হাজার টাকা ধার নেন। ধারের টাকা দিতে না পারায় এই টাকার জন্য বেশ কয়েকবার সালিস বৈঠক হয়। পাওনা টাকার জন্য বৃহস্পতিবার রাতে তার ননদ ও স্বামীকে তুলে নেয়ার জন্য শিরিন ৮/১০ জনের একটি দল নিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে আসেন। এসময় তাদের সাথে হাতাহাতি হয়। স্থানীয়রা বিষয়টি মিমাংসার জন্য উভয়পক্ষকে নিয়ে নবীপুর বাজারে কামাল মাস্টারের অফিসে সালিশ বৈঠকে বসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সালিশ চলাকালে অফিসের বাইরে শিরিনা বেগমের সাথে আসা মারুফ, মারফতসহ কয়েকজন আক্তারের স্ত্রী রাবেয়া বেগমকে লাথি মেরে ফেলে দেন। এ সময় রাজিব নামের একজন রাবেয়াকে রক্ষা করতে যান। এতে মারুফ, মারফত রাজিবের বুকে ও শরীরে এলোপাথারি কোপাতে থাকেন। রাজিবকে বাঁচাতে আসলে আক্তার হোসেন, তার বাবা মোজাফ্ফর এবং কাকা জসিম উদ্দিনকেও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে।
নিহতের ভাই আলমগীর হোসেন জানান, আমার ভাই ফার্নিচারের নকশার কাজ করত। বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যার পর তার বন্ধুর সাথে সালিশ বৈঠক দেখতে যায়। সেখানে ঘাতকের হাত থেকে এক নারীকে বাঁচাতে গিয়ে ভাড়াটে খুনির হাতে নির্মমভাবে খুন হন। সে বিয়ে করেছে ৩ বছর। দুই বছরের একটি শিশু পুত্র আছে। আমরা এই হত্যারীসহ জড়িতদের ফাঁসি চাই।
সালিশকারক কামাল মাস্টার বলেন, বিচার প্রায় শেষ। এমতাবস্থায় দুইজন অপরিচিত ছেলে ভিতরে ঢুকে। ধর বলে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেই আচমকা আক্রমণ করে। প্রথমে মনে হয়েছে কিল ঘুষি দিচ্ছে। তাৎক্ষণিক রক্তপাত দেখে লক্ষ্য করা গেছে ওর হাতে চকচকে ধারালো অস্ত্র। কিলার ভাড়াটে ও দুর্ধর্ষ। তাকে আটক করে আইনের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল হক বলেন, হত্যার ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।