রাজশাহী প্রতিনিধি:
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ারের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হাসপাতালে সংঘর্ষ ও ভাঙচুকরার প্রতিবাদে ডাকা কর্মবিরতি স্থগিত করে একদিন কর্মবিরতির পর কাজে ফিরেছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকালে তারা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাসেবা দেয়া শুরু করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইযাজদানী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে হাসপাতাল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে শুক্রবার সকাল থেকে কাজে ফেরার ঘোষণা দেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইমরান হোসেন। এ সময় হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন তিনি।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কাজে ফিরেছেন। আগের দিন বিকেল থেকেই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একটি অংশ জরুরি বিভাগে কাজ শুরু করেছিলেন। এখন হাসপাতালের অবস্থা ভালো।
এদিকে দুদিন ভোগান্তির পর অবশেষে চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন রোগীরা। সকাল থেকেই তাদের ব্যবস্থাপনাপত্র ও ওষুধ নিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ডাক্তারকে কর্ম ব্যস্ততার মধ্যে সময় পার করতে দেখা গেছে।
শিবগঞ্জ থেকে আসা রোগীর স্বজন আক্তার হোসেন বলেন, দুদিন এখানে তেমন কোনো চিকিৎসা হয়নি। রোগী ভর্তি করিয়েছিলাম মাত্র। তবে আজ সকালে ডাক্তার এসেছে ওষুধ লিখে দিয়েছেন।
আর এক রোগীর স্বজন সাইদুর রহমান বলেন, সকালে ডাক্তার দেখেছেন, ওষুধ লিখে দিয়েছেন। আজ রাতে অপারেশন হতে পারে এ জন্য রক্ত ব্যবস্থা করতে বলেছেন। গত দুদিন কোনো ডাক্তার দেখা পাইনি। আজ সকাল থেকে ডাক্তারের দেখা পাচ্ছি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত আটটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী কে জি এম শাহরিয়ার হলের তৃতীয় তলার বারান্দা থেকে পড়ে গেলে দ্রæত তাকে অ্যাম্বুলেন্সে রামেক হাসপালে ৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পর চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রাবির শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে রাবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। পরে রাত ১২টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা সবাই একযোগে হাসপাতাল ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের রামেকের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে কোনো শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়নি।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন হাসপাতালের ওয়ার্ড, বিভিন্ন বøকের কক্ষের দরজা-জানালা, ফুলগাছের টব ভাঙচুরসহ চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মচারীদের গালিগালাজ, লাঞ্ছিত ও মারধর করা হয়েছে। তবে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।