জামালপুরের মেলান্দহে মাঠজুড়ে সরিষার আবাদ প্রকৃতিকে সুশোভিত করেছে। ফুটিয়েছে কৃষকের মুখের হাসির ঝিলিক। মৌমৌ গন্ধে মাঠভরা সরিষার ফুল হ’তে মধু সংগ্রহের জন্য দূরদূরান্ত থেকে মৌ-চাষিদেরও আগমন ঘটেছে। স্থানীয়ভাবে মৌ-চাষি না থাকলেও; নরসিংদী, সোনারগাঁ, খুলনা, মধুপুরছাড়াও বিভিন্ন এলাকার মৌয়ালরা মধুচাষে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সরিষা ফুলের দিগন্ত মাঠে মৌমাছির সারিসারি বাক্স বসিয়ে অভিনব পন্থায় মধু সংগ্রহের দৃশ্য অবলোকনে স্থানীয়দেরও ভীড় জমেছে। সংগৃহিত মধু স্থানীয়ভাবেও বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু এই মধু সংগ্রহে মৌয়ালদের নানা প্রতিকুলতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে। মৌমাছির আনাগোনায় সরিষার ফুলের পরাগায়নে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এতে সরিষার ফলনও ভালো হয়। কৃষি বিভাগ কৃষকদের সচেতন করছেন। গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল কৃষকরা সরিষার ক্ষেতে মধু সংগ্রাহকদের এখন বাধা প্রদানও করছেন না।
মধুপুর থেকে আগত মৌয়াল সজিব মিয়া (১৯) জানান, সঠিকভাবে মধু সংগ্রহ করতে পারলে খরচপাতি শেষে বছরে ২/৩ লাখ টাকা লাভ থাকে। আরেক মৌয়াল খোরশেদ আলম (৫৫) জানান-২০০২ সাল থেকে আমি বাণিজ্যিকভাবে মধুচাষ শুরু করেছি। ওয়াশিংটন কলেজ আয়োজিত মধুচাষের উপর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। এরপর থেকেই এই পেশায় আছি। ৩-৪ জন কর্মচারি দিয়ে মৌচাষ পরিচালনা করে আসছি। তিনি জানান-মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের কাছে বাধার সম্মুখিন হতাম। এখন সেটা নাই। কিছু কিছু জায়গায় যাওয়া আসার পথে পুলিশী হয়রানি শিকার হই। তিনি আরো জানান-সরকারের উদ্যোগে মধু রপ্তানিতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
সোনারগাঁ থেকে আগত মৌয়াল ইব্রাহিত (৩৬) জানান-সরিষা ফুলে কীটনাশক ছিটানোর ফলে মৌমাছিও মারা যাচ্ছে। আগাছা দমনের ন্যায় সরিষায় কীটনাশক প্রয়োগ করা যায় এমন আবিষ্কার কৃষি বিজ্ঞানীদের কাছে আমরা আশা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ড. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল জানান, এবার ৮টি স্পটে মধু সংগ্রহ চলছে। সরিষা এবং মধু দু’টির ফলনই জরুরি। কীটনাশক স্প্রে করলে মৌমাছির সহনশীল প্রযুক্তি এখনো আবিষ্কার হয়নি। তাই মৌয়ালদেরও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।