মমিনুল ইসলাম মোল্লা,মুরাদনগর কুমিল্লা প্রতিনিধি।
কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামের রোকসানা বেগম ওরফে রুবির পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই এলাকাবাসীর নজরে ছিল। তাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, রুবির পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে, যদিও এর সত্যতা নিয়ে রয়েছে ভিন্নমত।
স্থানীয় বাজারসংলগ্ন এলাকায় রুবির বাড়ি হওয়ায় তাদের প্রভাব ও উপস্থিতি স্থানীয় ব্যবসায়িক পরিসরে দৃশ্যমান ছিল। কেউ কেউ বলেন, পরিবারটি নিজ এলাকাতেই মাদক ব্যবসার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। তবে এ অভিযোগের অধিকাংশই ছিল গুজবনির্ভর এবং প্রমাণের অভাবে মামলা হলেও কার্যকর হয়নি।
ঘটনার আগের সপ্তাহে স্থানীয় একজন শিক্ষকের মোবাইল ফোন চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ রুবির পরিবারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে খেপিয়ে তোলে। মোবাইল চোর হিসেবে অভিযুক্ত তরুণ বোরহান ছিল রুবির মেয়ে তাসপিয়ার স্বামীর সহযোগী, যিনি নিজেও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পরিচিত। এখানেই রুবিদের পরিবারের ওপর সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।
তবে নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার দাবি করেন, তার শ্বশুরবাড়ির কেউই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং পূর্বপরিকল্পিত হামলার অজুহাত ছিল মাত্র।
রুবির পরিবারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর প্রকৃত সত্যতা এখন তদন্তাধীন। কিন্তু এটি স্পষ্ট, দীর্ঘদিনের সামাজিক অবিশ্বাস ও অনিয়ন্ত্রিত গুজবই এক ভয়ঙ্কর গণপিটুনির জন্ম দিয়েছে। মাদকবিরোধী সামাজিক প্রতিরোধ যদি আইননির্ভর না হয়, তা হলে তা সহিংসতার রূপ নিতে পারে—যার জ্বলন্ত উদাহরণ রুবি ও তার পরিবারের করুণ পরিণতি।