বিশেষ প্রতিনিধি:
সাংবাদিক এ টি এম তরিকত উল্লাহ প্রকাশ্যে মোহাম্মদ তরিকত উল্লাহ বাদী হয়ে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম খাদি বস্ত্রের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ‘খাদি ভবন’, মনোহরপুর কুমিল্লা এবং কান্দিরপাড়স্থ ‘খাদি শিল্প ভবন’-এর স্বত্তাধিকারী কানাই কুমার দাস ও তাহার ভাতিজা চন্দ্র জিৎসহ জনৈক মোঃ আবিরসহ অজ্ঞাতনামা বিবাদীর বিরুদ্ধে কুমিল্লা দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-২২/১৭৩, তারিখ: ২২ আগস্ট ২০২২ইং, ধারা: ৩৮৫/ ৩৮৬/ ৩৬৪/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালতের শেষ আদেশ উল্লেখ ‘এতে স্পষ্টই দেখা যায় যে, বাদী (মোহাম্মদ তরিকত উল্লাহ) নিজেই একজন প্রতারক শ্রেণীর ব্যক্তি এবং বিবাদীদের হয়রানি করার হীন উদ্দেশ্যে সেই এই মামলা দায়ের করেছেন।’ ঘটনার বিবরণে জানা যায় যে, মোহাম্মদ তরিকত উল্লা নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে, বিবাদী পক্ষকে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ী বলিয়া অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনাটি গত ১০ জুন ২০২২ তারিখ রাত ১২ ঘটিকার সময় কুমিল্লা কান্দিরপাড় বাদুরতলাস্থ টাইপ স্কুলের গলিতে তরিকত উল্লাহর নির্মানাধীন বিল্ডিং-এর এক রুমের দরজা ভাঙ্গিয়া বিবাদী পক্ষ প্রবেশ করিয়া বাদীকে হাত পা বাধিয়া ১নং বিবাদী কানাই কুমার দাস বাদীকে পিস্তল দিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখাইয়া বাদীর ড্রয়ারে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি, ব্যাংকের চেক বই ও নগদ ১লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিয়া যায়। পরবর্তীতে বাদী স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানাইলে তাহারা সুরাহার আশ্বস্ত করেন এবং গত ১৩ জুন ২০২২ইং তারিখ বাদী নিজেই বিবাদীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা মনোহরপুর খাদি ভবনে গেলে বিবাদীপক্ষ বাদীকে দেখিয়া ১নং বিবাদী কানাই কুমার দাস তাহার কোমর থেকে পিস্তল বাহির করিয়া বাদীকে মৃত্যুর ভয় দেখায় এবং ৩নং বিবাদী বাদীর গলায় ছুরি ধরিয়া তাহার নিকট থেকে ২টি নন জুডিসিয়াল স্টাম্পে জোর পূর্বক স্বাক্ষর নেয় এবং বাদীর ব্যবসায়ীক কাজে বাদীর সঙ্গে থাকা রূপালী ব্যাংকের একটি চেক বাদীর মানি ব্যাগ থেকে ছিনিয়ে নেয় এবং বাদীর বাম পকেটে থাকা ২৫ হাজার ৫ শত টাকা ২নং বিবাদী চুরি করিয়া নিয়া যায়। ২নং বিবাদী গামছা দিয়া বাদীর চোখ ও মুখ বেধে ফেলে। পরবর্তীতে বাদীকে একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাসে উঠাইয়া অপহরণ করিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে বাদীকে চান্দিনা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় নিয়া বাদীকে বলে যে, ‘তর জীবনের শেষ ইচ্ছা কি, আজ তর শেষ দিন, তখন ৩নং বিবাদী বাদীর মুখ থেকে গামছা সরাইয়া নিলে বাদী মৃত্যুর ভয়ে জোর চিৎকার দিলে বাদীর মানিত সাক্ষীসহ আশে পাশের লোকজন আগাইয়া আসিতে দেখিলে বিবাদীপক্ষ মাইক্রোবাসসহ বাদীকে ফেলিয়া চলিয়া যায়। তখন বাদী তাহার মানিত সাক্ষী মোঃ মাসুদুর রহমান মাসুমের সহায়তায় বাদী তাহার বাসায় আসে। উক্ত বিষয়ে বাদী মোহাম্মদ তরিকত উল্লাহ চান্দিনা থানায় মামলা দায়ের করিতে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাদীকে বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। বাদীর ভাষ্যমতে ঘটনাটি চান্দিনা বাগুর বাসস্ট্যান্ড যাহা লোকমুখে চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড নামে পরিচিত তাহা চান্দিনা থানার এখতিয়ারাধিন নয়, দেবিদ্বার থানার একতিয়ারাধিন। পরবর্তীতে বাদী মোহাম্মদ তরিকত উল্লাহ কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিঃ ০৭নং আমলী আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত ঘটনার সংবেদনশীলতা ও প্রকৃতি বিবেচনায় ওসি দেবিদ্বারকে এফ আই আর করার নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে মোহাম্মদ তরিকত উল্লাহ বাদী হয়ে বিবাদী কানাই কুমার দাসসহ আরও দুই জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজু হওয়ার পর বিবাদী পক্ষ প্রতিনিয়ত হয়রানীর স্বীকার হয়। গত ৬ মাস মামলাটি চলমান থাকিয়া গত ৯ ফেব্রæয়ারি বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলার একটি আদেশ জারি করেন। যাহাতে লেখা বিজ্ঞ আদালত মামলার সিডি ও নথি পর্যবেক্ষণ করেছেন। বাদী কর্তৃক প্রদত্ত সিআরপিসি’র ২০০ ধারার জবানবন্দি পর্যবেক্ষণ করেন। বাদী তার নালিশে উল্লেখ করেন যে, ১নং বিবাদী ১ম ঘটনার তারিখে অর্থাৎ ১০.০৬.২০২২ইং তারিখ পিস্তল দিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তার নিকট হতে গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি, ব্যাংকের চেক বই, নগদ টাকা নিয়ে যায় এবং ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। কিন্তু বাদীর প্রদত্ত জবানবন্দিতে এ ধরনের কোন বক্তব্য উল্লেখ নেই এবং নারাজি দরখাস্তেও উল্লেখ করা হয়নি। নালিশী দরখাস্তের হলফী জবানবন্দিতে বাদী উল্লেখ করেন যে, বিবাদীদের কোন সুনির্দিষ্ট কোন পেশা নেই, তাহারা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। অন্য দিকে নালিশী দরখাস্তে উল্লেখ রয়েছে ৩নং বিবাদীর কাপড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে যেখান থেকে তাহাকে অপহরণ করা হয়। বাদীর বক্তব্য অনুযায়ী ২য় ঘটনার দিন অর্থাৎ ১৩.০৬.২০২২ইং ২নং বিবাদী গামছা দিয়ে বাদীর চোখ মুখ বেঁধে ১নং বিবাদীর কাপড়ের দোকান থেকে অপহরন করে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে চান্দিনা বাস স্ট্যান্ড একটি জনবহুল এলাকায় বাদীকে নামিয়ে দিয়ে বিবাদী পক্ষ চলে যায়। কিন্তু বিবাদী পক্ষ বাদীকে অপহরনের ইচ্ছা থাকলে বিবাদীরা বাদীকে মাইক্রোবাসে অজ্ঞান করে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যেতে পারতো, বাসস্ট্যান্ডের মতো একটি জনবহুল এলাকায় বাদীকে চিৎকার করে সাক্ষীদেরকে ডেকে আনার সুযোগ দিতোনা। নালিশের বর্ণনানুযায়ী ১০.০৬.২০২২ইং রাত ১২.০০ টায় নির্মাণধীন ভবনে বিবাদীরা বাদীর নিকট ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে এবং পিস্তল দিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে তার ড্রয়ারে রক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ দলিল, ব্যাংকের চেক বই ও নগদ টাকা নিয়ে যায়, যা অত্যন্ত গুরুতর প্রকৃতির অপরাধ। কিন্তু বাদী তরিকত উল্লাহ উক্ত বিষয়ে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করে ২য় ঘটনার দিন আপোষের জন্য ৩নং বিবাদীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যান যা নিতান্তই অমূলক, বিভ্রান্তিকর এবং বানোয়াট মর্মে আদালত মনে করছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাদীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের সিডিআর সংগ্রহ করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, ১ম ঘটনার তারিখ অর্থাৎ ১০.০৬.২০২২ইং তারিখ হতে ১২.০৬.২০২২ইং তারিখ রাত পর্যন্ত বাদীর অবস্থান ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে এবং ২য় ঘটনার তারিখ অর্থাৎ ১৩.০৬.২০২২ইং তারিখ রাতে বাদী কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানাধীন ছোটরা ও মনোহরপুর এলাকায় সনাক্ত হয়। অথচ বাদী অভিযোগ করেছেন যে, তাকে ঐ সময়ে অপহরণ করে চান্দিনা বাস স্ট্যান্ডে নেওয়া হয়। যা প্রকৃত ঘটনার সাথে বাদীর জবানবন্দি ও জেরার বক্তব্যে সামঞ্জস্যহীন মর্মে দেখা যাচ্ছে। উক্ত তদন্তকারী অফিসারের চূড়ান্ত প্রতিবেনের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী বাদী বিবাদীদের সম্পত্তির জাল দলিল সৃজন করলে বিবাদীপক্ষ উক্ত জাল দলিল বাতিলের জন্য বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতে দেওয়ানী ৬০০/১৯ নং মামলা করায় বিবাদীদের হয়রানী করার উদ্দেশ্যে বাদী মোহাম্মদ তরিকতউল্লাহ অত্র মামলাটি দায়ের করেছেন। এতে স্পষ্ট দেখা যায় যে, বাদী নিজেই একজন প্রতারক শ্রেণীর ব্যক্তি এবং বিবাদীদের হয়রানী করার হীন উদ্দেশ্যে সেই এই মামলাটি দায়ের করেছেন। সার্বিক পর্যালোচনায় বাদীর দাখিলীয় নারাজির দরখাস্ত বিবেচনা না করত: চূড়ান্ত রিপোর্ট গৃহীত হলো। বিবাদীগণকে মামলার দায় হইতে অব্যাহতি প্রদান করা হইল। তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক বাদী মোহাম্মদ তরিকত উল্লাহ’র বিরুদ্ধে দন্ড বিধি ২১১ ধারার প্রসিকিউশন রিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। কানাই কুমার দাস বলেন, এ টি এম তরিকত উল্লাহ একজন ভূয়া সাংবাদিক সে নিজেকে এটিএম গ্রæপের চেয়ারম্যান পরিচয় দেয় ও মুক্ত বাংলা আউটসোর্সি নামীয় ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে পোস্টার লিফলেট ছাপিয়ে প্রচার প্রচারণা করিয়া বিভিন্ন লোকজনদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়া প্রতারণা করিয়াছে এবং করিতেছে বিগত দিনে তাহার অপরাধ কর্মকান্ডের দরুন তরিকত উল্লাহ পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে থাকিয়া জামিনে মুক্তি পাইয়াছে সে একজন প্রতারক, মাদক ব্যবসায়ী ও দখলবাজ প্রকৃতির তাহার নামে একাধিক মামলা আছে। সে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানাধীন রাজাপুর ইউনিয়নের শংকুচাইল গ্রামের মৃত এ টি এম শামছুল হক ও শওকত আরা বেগমের ছেলে।
এ টি এম মোঃ তরিকত উল্লাহ, কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী প্রাচীনতম খাদি বস্ত্রের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, ‘খাদি ভবন’ মনোহরপুর কুমিল্লা এবং কান্দিরপাড়স্থ ‘খাদি শিল্প ভবন’-এর স্বত্তাধিকারী কানাই কুমার দাসের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন ও ব্যবসায়িক সুনাম খ্যাতি নষ্ট করা এবং কানাই কুমার দাস ও তাহার ভাইয়ের জায়গা এবং বর্তমানে প্রবাসে অবস্থানরত পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সম্পদ ও সম্পত্তি জবর দখলের চেষ্টা এবং সু কৌশলে তাহার আয়ত্তে আনার চেষ্টায় লিপ্ত আছে। এ সকল অপরাধ কর্মকান্ডের দরুন তরিকত উল্লাহ’র দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে কানাই কুমার দাস ও তাহার পরিবার প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেছেন।