অনলাইন ডেস্ক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় লিচু, কাঁঠাল, মাল্টা, পেয়ারার পর এবার প্রথমবারের মতো চায়না-থ্রি-জাতের কমলার আবাদের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের প্রবাসফেরত যুবক মো. আলমগীর হোসেন ২ বিঘা জমিনে ১৮৫টি কমলা গাছ রোপন করে কমলা বাগান গড়ে তুলেছেন। প্রথমবারেই তার কমলা বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। তার বাগানের ফলন দেখতে প্রতিদিনই দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন।
এলাকার বেকার যুবকেরা বলছেন, কৃষি বিভাগের সহযোগীতা পেলে তারাও অনাবাদি জমিগুলোতে কমলার আবাদ শুরু করবেন। আর স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, আলমগীরের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে কমলা চাষে এলাকার অন্য চাষিদের উৎসাহিত করা হবে।
সরেজমিনে বাগানে গিয়ে দেখা যায়, গাছে-গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ঝুলছে কমলা রংয়ের পাকা রসালো কমলা আর কমলা। খেতেও বেশ সুস্বাদু। বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের দুলালপুর গ্রামের আলমগীর মিয়া দীর্ঘ দুই দশক প্রবাস জীবন কাটিয়ে কয়েক বছর পূর্বে দেশে আসেন।
কৃষক আলমগীর জানান, ইউটিউবের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গায় কমলার আবাদের ভিডিও দেখে ওই চাষীর সাথে যোগাযোগ করি। পরে ওই বাগান পরিদর্শন করে চাষীর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে এলাকায় এসে চায়না থ্রি-জাতের কমলার চারা বাগান গড়েন। তার চাচার কাছ থেকে ৬৫ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন কমলার আবাদ। মাত্র দুই বছরের মাথায় তার বাগানে চোখ ধাঁধানো কমলার ফলন পেয়ে অনকেটাই খুশি চাষী আলমগীর।
চাষী আলমগীর বলেন, ১৮৫টি চারা রোপন করেছি। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২শত কেজি কমলা বিক্রি করেছি ১৭০ টাকা কেজি দরে। বাজারে নিয়ে যেতে হয়নি। দর্শনার্থীরাই বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগান করার সময় গ্রামের অনেকেই বলেছিলেন এই এলাকায় কমলার চাষ হবে না। তবে চেষ্টা করে এখন আমি কমলা চাষে সফল হয়েছি। তার সফলতা ধেকে এলাকার চাষীরা বলছেন, সরকারী সহায়তা পেলে তারাও অনাবাদি জমিগুলোতে কমলার বাগান তৈরী করবেন।
রাজু মোল্লা নামে এক চাষী বলেন, এই এলাকায় কমলার চাষ লাভজনক এবং ফলনও খুব ভাল হয়। মো. মুসা মিয়া নামে আরেক চাষী বলেন, অল্প জায়গাতে কমলার চাষে প্রমানিত হল যে এই এলাকা কমলা চাষের জন্য উপযোগী। আগামীতে আমরাও আমাদের অনাবাদি জমিতে কমলার চাষ করতে আগ্রহী হয়েছি। সরকারের সহায়তা পেলে বৃহৎ পরিসরে আমরা কমলার চাষ করবো। এদিকে আলমগীরের বাগানে কমলার ভাল ফলন দেখে হতবাক হয়ে যান খোদ এলাকার কৃষি কর্মকর্তারা।
বিজয়নগর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মো. আব্দুল ওয়াদুদ ও হাদিউল ইসলাম বলেন, একাধিকবার পরীক্ষামূলকভাবে এই অঞ্চলে কমলার চাষ করেও সুফল পায়নি। তবে সফল চাষী আলমগীরের কাছ থেকে এবার পরামর্শ নিয়ে এই অঞ্চলে কমলার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবেন বলে জানান তারা।