কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর গ্রামের জোবেদা খাতুন কলেজে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে ১ টায় ১০-১৫ জনের একদল কাল পোষাক ও মুখোশ ধারী কলেজের ৯ টি কক্ষে এক সঙ্গে ধার্য্য পদার্থ দিয়ে অগ্নি সংযোগ। সেই সাথে ১৫-১৬টি ককটে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অগ্নি সংযোগের ফলে কলেজের সম্পূর্ণ আসবাবপত্র, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কলেজ কতৃপক্ষের দাবী। খবর পেয়ে রাতে বুড়িচং ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম স্টেশন অফিসার মোঃ আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদশী সূত্র জানায় জেলার বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন এর পীরযাত্রাপুর গ্রামের জোবেদা খাতুন কলেজে একদল ১০-১৫ জনের কাল পোষাক ও মুখোশ ধারী দূর্বৃত্তরা ধার্য্য পদার্থ দিয়ে অগ্নি সংযোগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পৌনে ১ টায়। আগুনের লেলিহান শিখা কলেজের চার দিকে মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় কলেজের মধ্যে ১০-১৫ টি বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরণেের ঘটনা ঘটে। তখন চার দিক থেকে মানুষ ছুটে আসতে দেখে দূর্বৃত্তরা স্হানীয় লোক জন কে গুলি করার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
কলেজ প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মোঃ জাকির হোসেন জাহের চেয়ারম্যান এর ভাই কবির হোসেন বলেন রাতে কলেজ প্রাঙ্গণে ককটেলের বিস্ফোরণ এর শব্দের আওয়াজ শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে কলেজের সামনে আসতে কালো পোশাক পরিহিত মুখোশ ধারী ১০-১৫ জন লোক আমাকে গুলি করার হুমকি এবং তারা দ্রুত পূর্ব দিকে সহ পালিয়ে যায়। অপর দিকে খবর পেয়ে বুড়িচং থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনা স্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ভূইয়া বলেন আমাদের কলেজ টি শত্রুতামূলক ভাবে নাশকতা করে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে। কলেজে প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে আমি এখন মারাত্মক বিপাকে পড়েছি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে শত্রুতামি করে ছাত্র – ছাত্রী ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করে কি লাভ। আমি এখন শিক্ষার্থী শিক্ষকদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছি। দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার চাই।
এদি কলেজে আগুন দিয়ে নাশকতার খবর পেয়ে শুক্রবার বিকালে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আক্তার ঘটনা স্থলে পরিদর্শন করেন। তিনি সরকারি সাহায্য সহযোগিতা করে কলেজটিকে দাঁড়াতে সহযোগিতা করবেন। যারা এ নাশকতা করে কলেজ পুড়িয়ে দিয়েছে তাদের কে ছাড় দেয়া যাবে। আইনের আওতায় এনে ওই দূর্বৃত্তদের বিচার করা হবে।
খবর পেয়ে কুমিল্লা -৫ আসনের এমপি অ্যাড. আবুল হাসেম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যারা কলেজ টি নাশকতা মূলক কান্ড ঘটিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানান। এছাড়া কলেজের যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা সহজে মিকাপ করা যাবে না। সরকারি ভাবে যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা করা সম্ভব তিনি তা করবেন। কলেজটি ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে তিনি সামনের দিকে খেয়াল রাখবেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান খান, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাড. রেজাউল করিম খোকন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আবু তাহের, সহ-সভাপতি ডা. আবু মুছা ভূইয়া, বুড়িচং থানার ওসি মোঃ ইসমাইল সহ বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বুড়িচং থানার ওসি মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন পরিদর্শন কালে এবং স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বুঝা গেছে এটি একটি নাশকতা মূলক কান্ড। যারা এঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কে আইনের আওতায় আনা হবে। যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তারা সমাজের ঘৃণ্য লোক তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।