অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র নির্বাচন আগামী ২৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’র নির্বাচন ঘিরে গোটা কম্যুনিটি আবর্তিত হলেও ৪৯ বছরের পুরনো সংগঠনটির প্রতি প্রবাসীদের আন্তরিক কোনও আগ্রহ তৈরি হয়নি। কারণ দুইবছর অন্তর অনুষ্ঠিত প্রতিটি নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা যে ধরনের অঙ্গিকার করেন, তার পরিপূরক কোনও কাজই এখন অবধি করা হয়নি।
নিউ ইয়র্ক অঞ্চলেই সাড়ে তিন লাখের অধিক বাংলাদেশি বাস করছেন। তাদের বহুল প্রত্যাশিত একটি কম্যুনিটি সেন্টার এখন পর্যন্ত স্থাপিত হয়নি। এমনকি বহুজাতিক নিউ ইয়র্ক সিটিতে ‘বাংলাদেশ প্যারেড’ অনুষ্ঠানেও সক্ষম হননি বিগত দিনের নেতৃত্ব। মূলধারায় সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রেও দৃশ্যমান কোনও ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে প্রবাসীরা মনে করেন না।
অর্থাৎ সামগ্রিক কল্যাণের যে অঙ্গিকারে ১৯৭৫ সালে এই ‘বাংলাদেশ সোসাইটি’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার ধারেকাছেও যেতে না পারায় সাধারণ প্রবাসীরা পকেটের অর্থ ব্যয় করে খুব কম সময়ের মধ্যে ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত হচ্ছেন। আগামী ২৭ অক্টোবর যে নির্বাচন হবে সেজন্যও সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিপুল অর্থ ব্যয় করেছেন ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্তির ফি বাবদ।
১৮ হাজার ৬১৩ ভোটারের এ নির্বাচনে সরাসরি দুইটি প্যানেল মাঠে রয়েছে। একটির নেতৃত্বে রুহুল আমিন সিদ্দিকী এবং জাহিদ মিন্টু (রুহুল-জাহিদ প্যানেল) এবং আরেকটির নেতৃত্বে আতাউর রহমান সেলিম ও মোহাম্মদ আলী (সেলিম-আলী প্যানেল)। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স, ব্রঙ্কস এবং ব্রুকলীনে ৫টি ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি। জনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন। সকলের প্রত্যাশার পরিপূরক নির্বাচন অনুষ্ঠানে এখন দরকার প্রার্থীগণের আন্তরিক সহায়তা। সে অঙ্গিকারও পেয়েছি।
এ নির্বাচন উপলক্ষে গত ৮ সপ্তাহ ধরে প্যানেলভিত্তিক প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা। পোস্টারে ছেয়ে গেছে নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশি বাণিজ্যিক পাড়াসমূহে। টেলিফোনেও চলছে ভোট প্রার্থনা। রেস্টুরেন্টসমূহে এ উপলক্ষে বেচাকেনা বেড়েছে। পার্টি হলসমূহ প্রতিদিনই লোকে লোকারণ্যে পরিণত হচ্ছে নির্বাচনী সমাবেশ উপলক্ষে। মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের এই নির্বাচনে সার্বক্ষণিক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছেন দুই শতাধিক প্রবাসী।
এ উপলক্ষে ৪ শতাধিক ভোটারের ওপর টেলিফোনে পরিচালিত এক জরিপে দুই প্যানেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। ২০ অক্টোবর পর্যন্ত পরিচালিত এ জরিপে ‘রুহুল-জাহিদ প্যানেল’ সামান্য এগিয়ে রয়েছে বলে জরিপ পরিচালনাকারি দলের নেতা শাহনাজ আক্তার জানান।
উল্লেখ্য, উভয় প্যানেলের অঙ্গিকারের অন্যতম হচ্ছে কম্যুনিটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা, বাংলাদেশ প্যারেডের আয়োজন, মূলধারায় কম্যুনিটির সম্পৃক্ততা, নবাগতদের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরীর পাশাপাশি অভিবাসনের সমস্যায় থাকা প্রবাসীদেরকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান। এর বাইরেও অর্থ-সংকটে থাকাবস্থায় মৃত্যুবরণকারীদের লাশ এখানে দাফন অথবা স্বজনের কাছে প্রেরণের ব্যয়ভার বহন, প্রবাস প্রজন্মের জন্যে বাংলা স্কুল চালুর অঙ্গিকারও রয়েছে। ঘটা করে জাতীয় দিবসসমূহ পালনেও থাকবে বিশেষ আয়োজন।