অনলািইন ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ পানামা খাল নিয়ন্ত্রণের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। রোববার তার এমন মন্তব্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এরইমধ্যে ট্রাম্পকে তিরস্কার ও ভর্ৎসনা করেছেন পানামার প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রেকর্ড করা এক বক্তব্যে মুলিনো বলেন, পানামা খাল এবং তার আশপাশের প্রতিইঞ্চি জমির মালিক পানামার এবং এটিই বলবৎ থাকবে। এই ব্যাপারটি পানামার সার্বভৌমত্বের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং এ ইস্যুতে পানামা কখনও আপস করবে না।
সেই বক্তব্যে দেশটির প্রেসিডেন্ট জোসে রাউল মুলিনো আরও বলেন, চীন পানামা খাল নিয়ন্ত্রণ করছে বলে যে গুজব ছড়াচ্ছে, তা একেবারেই সত্য নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘উসকানি’ দেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানিয়েছেন পানামার প্রেসিডেন্ট। এর আগে রোববার যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে আমেরিকা ফেস্ট নামের এক জনসভায় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ‘ভুল হাতে’ পড়েছে উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, এই জনসভায় উপস্থিতদের মধ্যে কেউ কি পানামা খালের নাম শুনেছেন? আমি নিশ্চিত যে বেশিরভাগই শোনেননি। কারণ, অন্যান্য সব জায়গার মতো এই খাল থেকেও আমাদের বিতাড়িত করা হয়েছে।
উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার সংযোগস্থলে অবস্থিত পানামা রাষ্ট্র। ৭৫ হাজার ৪১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই দেশটিতেই অবস্থিত পানামা খাল, যা মিসরের সুয়েজ খালের পর বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ চলাচল উপযোগী বাণিজ্যপথ। প্রায় ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১১০ ফুট প্রশস্ত এই খালটি আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্ত করেছে। পানামা খাল না থাকলে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব থেকে পশ্চিম উপকূল অভিমুখে যাত্রাকারী যে কোনো জাহাজকে দক্ষিণ আমেরিকার কেইপ হর্ন হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কিলোমিটার (৮ হাজার নটিক্যাল মাইল) পথ অতিক্রম করতে হতো।
এ ছাড়া উত্তর আমেরিকার এক দিকের উপকূল থেকে দক্ষিণ আমেরিকার অন্য দিকের উপকূলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও পানামা খালের কারণে ৬৫০০ কিলোমিটার কম পথ পাড়ি দিতে হয়। ১৯১৪ সালে খালটি খনন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং টানা বেশ কয়েক দশক নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখার পর ১৯৭৭ সালে খালটির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ পানামার সরকারের হাতে তুলে দেয় ওয়াশিংটন।