টঙ্গী প্রতিনিধি:
জুবায়েরপন্থিদের উস্কানিতে সংঘর্ষ হয়েছে বলে দাবি করে সাংবাদ সম্মেলন করেছেন সাদপন্থিরা। একইসঙ্গে ইজতেমা ময়দানে তাদের লক্ষাধিক সাথী অবস্থান করছেন বলে জানানো হয়েছে।
বুধবার সাড়ে ১১টার দিকে ইজতেমা ময়দানে সাংবাদ সম্মেলনে সাদপন্থিদের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাথী মুয়াজ বিন নূর একথা বলেন। এ সময় সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েমসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে নূর বলেন, গতকাল সারা দেশ থেকে আমাদের সাথীরা ইজতেমা ময়দানের তুরাগ নদীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থান নেয়। রাত ২টার পর ইজতেমা ময়দান থেকে জুবায়েরপন্থিরা মশাল হাতে নিয়ে আমাদের সাথীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়লে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এরপর জুবায়েরপন্থিরা ময়দান ছেড়ে গেলে আমাদের সাথীরা ময়দানে প্রবেশ করেন। বর্তমানে আমাদের এক লাখ সাথী ময়দানে আছেন এবং ময়দানের পুরো নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে রয়েছে। সংঘর্ষে হতাহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি থাকায় সঠিক সংখ্যা বলতে সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার আমাদেরকে দিয়াবাড়ি মাঠে জোড় ইজতেমা করতে বলেছিল। আমরা সেখানে করতে পারব না কারণ লোকসমাগম সংকুলান হবে না। তাই আজ সরকারের সঙ্গে আমাদের আলোচনা ছিল। এই আলোচনায় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা ময়দানে আসতাম। কিন্তু গতরাতে জুবায়েরপন্থিদের উস্কানিতে সৃষ্ট সংঘর্ষে ময়দান আমাদের কাছে চলে আসে।
সাদপন্থিদের মিডিয়া সমন্বয়ক মো. সায়েম বলেন, আমাদের তিনজন সাথী নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আহত ও নিহতের সঠিক সংখ্যা পরে জানানো হবে।
এদিকে জুবায়ের গ্রুপের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বলেন, আমাদের তিনজন সাথী মারা গেছেন। তবে হাসপাতাল সূত্রে নিহতের সংখ্যা তিনজন বলে জানা গেছে।
তারা হলেন-কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত উসমান মিয়ার ছেলে আমিনুল হক বাচ্চু (৭০)। ঢাকার দক্ষিন খানের বেড়াইদ এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০), আরেকজন হলেন বগুড়া জেলার তাজুল ইসলাম (৭০)। তবে দুই পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে নিহতের সংখ্যা ৬ জন হলেও ৩ জনের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সিনিয়র ব্রাদার হাফিজুল ইসলাম নিহত ও আহতদের সংবাদ নিশ্চিত করে বলেছেন, একজন নিহত ও অসংখ্য লোক আহত হয়েছে। আহতরা এই হাসপাতালসহ বিভিম্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
টঙ্গী আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক আশরাফুল ইসলাম জানান, ঢাকায় নেওয়ার পথে বেলাল নামে একজন মারা গেছেন। তার বাড়ি ঢাকার দক্ষিন খান।
এদিকে ইজতেমা ময়দান এখন সাদপন্থিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও পুলিশসহ মাঠ পর্যায়ে থাকা সকল বাহিনীর ছয় শতাধিক সদস্য মোতায়েন রয়েছে।