জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্র রাজনীতিসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ সংলগ্ন সড়ক ও ছাত্রীদের আবাসিক হল সংলগ্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের আবাসিক ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের কাছে লিখিত তিন দফা দাবি পেশ করেন।
দাবিগুলো হলো-ক্যাম্পাসে সকল ধরনের দলীয় ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী রাজনীতি নিষিদ্ধ করা; দ্রুত সময়ে জাকসু নির্বাচন দেওয়া; গত ১৫ ও ১৭ জুলাই কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মদদদাতা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা দায়ের এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।
শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি জাবিতে সংঘটিত গণপিটুনির শিকার হয়ে ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার মৃত্যুকে ছাত্র রাজনীতির কুফল বলে আখ্যায়িত করেন। শামীম মোল্লা ছাত্রলীগের রাজনৈতিক ব্যানার ব্যবহার করে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর ওপর নির্মম নির্যাতন ও হামলা চালিয়ে আসার কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, ক্যাম্পাসে এখন পর্যন্ত ছাত্র রাজনীতির সুফলের চেয়ে কুফল আমরা বেশি দেখেছি। যে সরকারই ক্ষমতায় আসে তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। সম্প্রতি সংঘটিত ছাত্রলীগের ক্যাডার শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় জড়িতদের অনেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে জাকসু নির্বাচন দিতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্যাম্পাসে দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যাব।
এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে তাদের আশ্বস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেছেন, আমি সবসময় ক্যাম্পাসের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অংশীজনের ভালোর জন্য কাজ করেছি। ইতোমধ্যে ১৫ ও ১৭ জুলাইয়ের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যদি ক্যাম্পাসে রাজনীতি না চায় তাহলে সেটা সকলের মতামতের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হবে। এরজন্য শীঘ্রই আমরা প্রশাসনিক বৈঠক করবো।