অনলাইন ডেস্ক:
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ও একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে কাজ করতে “সংহতি, প্রতিরোধ, পুনর্গঠন” স্লোগান ধারণ করে “জাতীয় নাগরিক কমিটির” আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। এতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছে মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছে ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ও মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন সামান্তা শারমিন।
আজ রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। কমিটি ঘোষণা করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এসময় গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছাত্র জনতার স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বক্তব্য রাখেন বেশকিছু শহীদের স্বজনরা।
সদ্য ঘোষিত এই জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- আরিফুল ইসলাম আদীব, সাইফ মোস্তাফিজ, মনিরা শারমিন, নাহিদা সারোয়ার চৌধুরি, সারোয়ার তুষার, মুতাসিম বিল্লাহ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, অনিক রায়, জাবেদ রাসিন, মো. নিজাম উদ্দিন, সাবহানাজ রশীদ দিয়া, প্রাঞ্জল কস্তা, মঈনুল ইসলাম তুহিন, আব্দুল্লাহ আল আমিন, হুযাইফা ইবনে ওমর, শ্রবণা শফিক দীপ্তি, সায়ক চাকমা, সানজিদা রহমান তুলি, আবু রায়হান খান, মাহমুদা আলম মিতু, অলিক মৃ, সাগুফতা বুশরা মিশমা, সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ, তাসনিম জারা, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, মো. আজহার উদ্দিন অনিক, মো. মেসবাহ কামাল।
তালিকায় আরো রয়েছে আতাউল্লাহ, এস, এম, শাহরিয়ার, মানজুর- আল- মতিন, প্রীতম দাশ, তাজনুভা জাবীন, অর্পিতা শ্যামা দেব, মাজহারুল ইসলাম ফকির, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মুশফিক উস সালেহীন, তাহসীন রিয়াজ, হাসান আলী খান, মো. আব্দুল আহাদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, মশিউর রহমান, আতিক মুজাহিদ, তানজিল মাহমুদ, আবদুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, এস.এম. সুজা, মো.আরিফুর রাহমান, কানেতা ইয়া লাম লাম, সৈয়দা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার, সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির, আকরাম হুসেইন
এর আগে গতকাল শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশের কথা জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দেশের সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ ও সহস্রাধিক শহীদ ও আহতদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নিকৃষ্টতম ফ্যাসিস্ট শাসক শেখ হাসিনার পতন ঘটেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের এক দফার দ্বিতীয় ধাপ তথা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান যে নতুন রাজনৈতিক ভাষা ও জনগোষ্ঠীর সম্ভাবনা হাজির করেছে, তা বাস্তবায়ন করতে হলে বাংলাদেশকে নতুন করে গঠন করতে হবে।
‘গণপরিষদের মাধ্যমে নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের ব্যাপারে সমাজে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক উদ্যোগের সাথে মত আদান-প্রদানের মাধ্যমে নতুন ঐতিহাসিক বোঝাপড়ায় উপনীত হওয়া এবং সেই মোতাবেক বাংলাদেশের জনগণকে সংগঠিত করা আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য।’
নতুন এই সংগঠনের সদস্য ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদিব ইনকিলাবকে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সাথে পরামর্শ করে আমরা এই কমিটি প্রণয়ন করেছি। এটি একটি চাপ সৃষ্টকারী সংগঠনের মতো কাজ করবে। দেশের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের লক্ষ্যে ক্রিয়াশীল বিভিন্ন রাজনৈতিক পক্ষ ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে কাজ করবে। প্রতিটি জেলায় জেলায় আমাদের কমিটি দেওয়া হবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত এবং নতুন এই সংগঠনের সমন্বয়কারীদের একজন আহমেদ ইসহাক বলেন, ছাত্রদের বাইরে নাগরিকদের নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হবে। তবে এর মূল নেতৃত্বে থাকবে ছাত্ররা। এটা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন না। এটা প্রেসার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে। তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন লিয়াজোঁ কমিটি বিভিন্নভাবে কাজ করছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে, যেখানে শুধুমাত্র নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরাই রয়েছেন। এর বাইরেও এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত বিরাট সংখ্যক ছাত্র-জনতা রয়েছে যাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করেই আমাদের এই সংগঠন কাজ করবে। মূলত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটাতে পেরেছি। কিন্তু এখনো রাষ্ট্রে তারই তৈরি করা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বহাল তবিয়তে রয়েছে। সেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ঘটানোর জন্য এই সংগঠনের আবির্ভাব।