নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে জমি বিরোধে দুই প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
আহতরা হলেন— উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের শ্যামপুর (নতুন মান্দরা) গ্রামের প্রবাসী মো. রাহাদ মিয়ার স্ত্রী মোসা. সীমা আক্তার (২৭) ও তার বড় ভাই প্রবাসী রাসেল মিয়ার স্ত্রী মোসা. এনা আক্তার (২৭)।
আহতদের মধ্যে এনা আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর সীমা আক্তার মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার জেলার মোহনগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। আহত দুই নারীর শ্বশুর আহাজ মিয়া বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
এতে প্রতিবেশী আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. সাব্বির মিয়া (২৭), মো. মোকাব্বির হোসেন (২৪), মৃত ছুলু হোসেন তালুকদারে ছেলে মো. কামরুল ইসলাম (৩৮), মো. ইমরান হোসেন সান্ত (৬০), মো. কামরুল ইসলামের ছেলে মো. অনিক মিয়া (২১) ও ইমরান হোসেন সান্তর ছেলে মো. সুমন মিয়াসহ (২২) ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এরআগে সোমবার সকালে উপজেলার শ্যামপুর (নতুন মান্দরা) গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে সাব্বির মিয়াকে মোহনগঞ্জ হাসপাতাল গেটে মারধর করায় আহাজ মিয়াসহ শহর এলাকার ৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের সঙ্গে আহাজ মিয়ার জমি নিয়ে পুরনো বিরোধ রয়েছে। আহাজ মিয়ার তিন ছেলে ওমান প্রবাসী। নিজের স্ত্রী আর দুই ছেলের বউকে নিয়ে শ্যামপুর গ্রামে বসবাস করেন আহাজ। পুরনো বিরোধের জেরে গত সোমবার সকালে অভিযুক্তরা রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালায়। বাধা দেওয়ায় আহাজ মিয়ার ছেলের বউ সীমা ও এনা আক্তারকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় বউদের বাঁচাতে গেলে শ্বাশুড়ি দিলজুরা বেগমকেও হামলাকারীরা পিটিয়ে আহত করে। বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে।
একপর্যায়ে এনা আক্তারের গলায় থাকা সোনার চেইন ছিনিয়ে নেয়। পরে হুমকি দিয়ে চলে যায় হামলাকারীরা। এদিকে আহত সীমা ও এনা আক্তারকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে চিকিৎসক গুরুতর আহত এনা আক্তারকে মমেক হাসপাতালে পাঠান। এ ঘটনায় আহাজ মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেন।
এদিকে অভিযুক্ত মোকাব্বির হোসেন হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি হাওরে কাজে ছিলাম। পরে বাড়িতে এসে ঘটনা শুনেছি। মূলত উভয় পক্ষের নারীদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। এতে আমার বড় ভাই সাব্বির মিয়ার স্ত্রী শেলী আক্তার আহত হয়েছেন। অপরপক্ষের সীমা ও এনা আক্তারকে আমাদের কেউ মারধর করেনি। আমাদের ফাঁসাতে তারা নিজেরাই নিজেদের শরীর হয়তো কেটেছে।
এদিকে স্ত্রীকে মোহনগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে সাব্বিরকে সেখানকার লোকজন নিয়ে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহাজ মিয়াসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহনগঞ্জ থানার এসআই কানাই লাল চক্রবর্তী বলেন, উভয়পক্ষই থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।