স্পোর্টস ডেস্ক:চ্যাম্পিয়নস প্রথম ট্রফির সেমিফাইনালে ভারতের সামনে ২৬৫ রানের লক্ষ্য দিয়ে একাধিক রেকর্ড ভাঙার চ্যালেঞ্জ রেখেছিল অস্ট্রেলিয়া। অজিদের হারিয়ে ফাইনালে উঠতে এসব রেকর্ড ভাঙতে হতো রোহিত শর্মার দলকে। অজিদের ৪ উইকেটে হারিয়ে সেই চ্যালেঞ্জ জিতল ভারত, পৌঁছে গেল চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে।নেওয়া হলো ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে হারের প্রতিশোধও।
আগামী ৯ মার্চ দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালের মঞ্চে ভারত মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ড কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার। আগের ঘোষণা অনুযায়ী, ভারত ফাইনালে উঠলে খেলা হবে দুবাইয়ে। এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া জিতলে, ফাইনাল অনুষ্ঠিত হতো লাহোরে।
প্রথমে ব্যাট করে এদিন নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৩ বল বাকি থাকতে ২৬৪ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। বাঁচা-মরার ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় অজিরা। দলে ঢুকেও শূন্য রানে এদিন ফিরতে হয় কুপার কনোলিকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে আতঙ্ক ছড়ানো ট্রাভিস হেড এদিনও বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। তবে তাকে ফিফটি করার আগেই থামিয়ে দেন লেগ স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। ৩৩ বলে ৩৯ রান করেন হেড।
তিন নম্বরে নেমে দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন স্টিভেন স্মিথ। ৯৬ বলে ৪টি চার ও ১ ছক্কায় ৭৩ রান করেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। ৩৬ বলে ২৯ রান করে ভালোই সঙ্গ দেন মারনাস লাবুশেন। তবে শেষদিকে অ্যালেক্স ক্যারি ছাড়া কেউই বড় সংগ্রহ গড়তে পারেননি। ৫৭ বলে ৬১ রান করে রান আউট হন এই ব্যাটার। ভারতের হয়ে চমৎকার বোলিং করেন আইসিসি টুর্নামেন্টে বরাবরই দাপুটে মোহাম্মদ শামি। ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। ১০ ওভারে ৪৯ রান খরচায় বরুণ ২টি ও ৮ ওভারে ৪০ রান দিয়ে জাদেজা ২ উইকেট শিকার করেন।
জবাব দিতে নেমে ভারতের ওপেনার রোহিত শর্মা ২৮ রান করলেও দুই অঙ্কের রান স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন শুভমান গিল। তবে ভারতের জয়ের ভিত্তি গড়ে দেন তিন ও চার নম্বরে নামা বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। ৪৩ রানে ২ উইকেট চলে যাওয়ার পর ৯১ রান যোগ করেন এই দুজন। ৪৫ রান করে আইয়ার আউট হলেও অবিচল থাকেন কোহলি। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন অক্ষর প্যাটেল (৩০ বলে ২৭)।
দলকে জয়ের কক্ষপথে নিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন কোহলি। দলীয় ২২৫ রানে ৯৮ বলে ৮৪ রান করে আউট হন তিনি। তবে দলকে একেবারে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান লোকেশ রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া। জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে পান্ডিয়া (২৪ বলে ২৮) আউট হলেও ছক্কা মেরে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়েন রাহুল (৩৪ বলে ৪২*)। ভারত পৌঁছে যায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে।
এদিন বেশকিছু রেকর্ড ভেঙে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত। ওয়ানডেতে আইসিসির কোনো ইভেন্টের নকআউট পর্বে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এত রান তাড়া করে আগে জেতেনি কোনো দল। আগের রেকর্ডটিও অবশ্য ভারতের। আহমেদাবাদে ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ২৬১ রানের লক্ষ্যে জিতেছিল তারা।
এছাড়াও, দুবাইয়ের এই মাঠেও এটি ভারতের সবচেয়ে সফল রান তাড়ার ঘটনা। স্পোর্টস্টারের তথ্য অনুযায়ী, দুবাইয়ের মাঠে এর আগে সর্বোচ্চ ২৪২ রান তাড়া করে জিতেছিল ভারত। চলতি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়ে ভারত। এই মাঠে সর্বোচ্চ ২৮৫ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড অবশ্য শ্রীলংকার। পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৩ সালে এই রেকর্ড গড়ে দলটি।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নকআউট ম্যাচেও রান তাড়ার আগের সর্বোচ্চ রেকর্ড স্পর্শ করল ভারত। এর আগেও একবার ২৬৫ রান তাড়া করে জিতেছিল দলটি। ২০১৭ সালের সেমিফাইনালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই রান তাড়া করে জিতেছিলেন বিরাট কোহলিরা। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসেই এটি সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের ঘটনা। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে এই রান তাড়া করেই জিতেছিল নিউজিল্যান্ড।