April 11, 2025, 1:42 pm
ব্রেকিং নিউজ
কৃষকরাই আমাদের বড় প্রাণ,কৃষকদের কথা সবার চিন্তা করতে হবে – কৃষি উপদেষ্টা পুলিশ মবজাস্টিস ভয় পায় না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা চান ইলিয়াস কাঞ্চন বিএনপির প্রতিবাদী র‌্যালি শুরু ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত জানাল পিএসসি এনসিপির সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের বৈঠক দুদক কার্যালয়ে হাসনাত-সারজিস ৩৬ টাকায় বোরো ধান, ৪৯ টাকায় চাল কিনবে সরকার যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য দূতকে নির্বাচনের সময় জানালেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন পিটার হাস ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ৬০ সেই কনস্টেবল রাষ্ট্রপতি পদকে ভূষিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক স্থগিত চেয়ে ট্রাম্পকে চিঠি ড. ইউনূসের ভোজ্যতেলের লিটারে ১৮ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব, সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রতিবাদ আওয়ামী লীগ সমর্থক ৭০ আইনজীবী কারাগারে সারা দেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি আরও বাড়বে: প্রেস সচিব বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সব সময় আছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হেফাজতের সঙ্গে বৈঠকে বসছে বিএনপি

চট্টগ্রামে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে: নিরাপত্তা হুমকিতে ১১ জেলা

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Tuesday, July 25, 2023
  • 133 দেখা হয়েছে

হায়দার আলী, চট্টগ্রাম:

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ১১ জেলায় রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে যা প্রতিনিয়ত নিরাপত্তা হুমকি হয়ে উঠছে। নিরাপত্তা হুমকির পাশাপাশি রোহিঙ্গারা মাদক, অস্ত্রসহ নানা অপরাধ জনক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় জনমনে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।

কক্সবাজার ছাড়াও চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষীপুর ও চাঁদপুরের সাধারণ জনগণের সঙ্গে রোহিঙ্গারা মিশে যাচ্ছে। এর পেছনে স্থানীয় দালালেরা কাজ করছে। দালালদের সহায়তায় রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে- ছিটিয়ে রয়েছে। রোহিঙ্গারা দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য অসাধু দালাল চক্রের সহায়তায় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ নিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি দিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দেওয়ার ব্যবসা এখন রমরমা। দেশ ছাড়ার সময় অনেক রোহিঙ্গা বিভিন্ন বিমান বন্দর থেকে গ্রেফতারও হয়েছে।

চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও কক্সবাজার জেলার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা যায়, “কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্প রয়েছে। এছাড়াও নোয়াখালী জেলার ভাসানচরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে। আশ্রয়ের বিনিময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলো মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাসহ নানা অপরাধ জনক কর্মকাণ্ডে সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আশ্রয় স্থল হিসেবে গড়ে উঠছে। ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে নিজেদের আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের অপরাধ, সন্ত্রাসী ও রাহাজানির ঘটনা ঘটেছে। রোহিঙ্গারা নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে গোলাগুলিতে নিহতের ঘটনা আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। এছাড়াও অপহরণ ও চাঁদাবাজির ঘটনায় রোহিঙ্গারা নিহত হওয়ার বিষয় গুলো আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ভাবনায় ফেলেছে। নানা অভিযানের পরেও রোহিঙ্গাদের অপরাধ নির্মূল করা যাচ্ছে না। এদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে গোলাগুলিতে একাধিক রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনাও ঘটেছে।”

চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, ” চট্টগ্রামের ১১ টি জেলায় রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে। বর্তমানে সব জায়গায় রোহিঙ্গা সংক্রান্ত নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। তারা বিভিন্ন ভাবে ক্যাম্প থেকে বেড়িয়ে একদিকে বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করছে। অন্যদিকে বিভিন্ন মাধ্যমে বিদেশে চলে যাচ্ছে। আমরা এসব বিষয়ে খতিয়ে দেখছি।”

এন্টি টেররিজম ইউনিট গণমাধ্যমে বলেন, “রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী জনগোষ্ঠীরা নানান অপরাধ জনক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়ছে যা নিয়ন্ত্রণ করা একটি চ্যালেঞ্জ। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। রোহিঙ্গাদের অপরাধ মুলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের সবধরনের নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নানা অপরাধ জনক কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফে ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) কার্যক্রম সারাদেশে পরিচালিত হচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের সন্ধান যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই তাদের আইনের আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

এন্টি টেররিজম ইউনিটের মিডিয়া এন্ড অ্যাওয়ার নেস শাখার পুলিশ সুপার আসলাম খান বলেন,”কোনো সন্ত্রাসী বা জঙ্গি গোষ্ঠী যাতে রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে অপতৎপরতা কিংবা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে আমরা এসব বিষয়ে রোহিঙ্গাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে।”

র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “দিন দিন রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। কিছুদিন আগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশ থেকে জঙ্গি সংগঠনের কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তাদের কাছে যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়াও ২১ জুলাই (শুক্রবার) রাত ১০ টার দিকে টেকনাফের বাহার ছড়া শামলা পুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি পাহাড় থেকে আরকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা)র সামরিক কমান্ডার হাফেজ নুর মোহাম্মদ ও তার সহযোগী ৫ সন্ত্রাসীকে ১ টি পিস্তল, ১ টি বিদেশি রিভলবার, ১ টি শর্ট গান, ৪ টি এলজি, ৩ টি রামদা, গোলাবারুদ ও ৭০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করে র্যাব। উখিয়া ও টেকনাফে আরসার আরও ৩০০ এর অধিক সন্ত্রাসী সক্রিয় রয়েছে। আরসা কমান্ডার হাফেজ নুর মোহাম্মদের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের সন্ত্রাসী দল ক্যাম্পে নানা অপরাধ জনক কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকেন। আরসার সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, “রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে ক্যম্প থেকে বেড় হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে। তারা ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ইয়াবাসহ মাদকের চালান পৌঁছে দিচ্ছে। রোহিঙ্গারা আমাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্পুর্নরুপে রোহিঙ্গাদের এসব অপরাধ জনক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। রোহিঙ্গাদের এসব ইয়াবাসহ মাদকের পাচার নিয়ন্ত্রণে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102