হায়দার আলী (স্টাফ রিপোর্টার) চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মহানগরীর হালিশহর থানাধীন এ ব্লকস্থ ফইল্ল্যাতলী বাজার এলাকায় চাঞ্চল্যকর রাবেয়া হত্যা মামলার আসামি স্বামী-ভগ্নপতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নিহত রাবেয়ার স্বামী মোঃ জামিল (২৪) ও জামিলের ভগ্নিপতি মোঃ মোস্তফা (২২)।
এদের মধ্যে গ্রেফতার জামিল হলেন- কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানাধীন দক্ষিণ হাঁটি করপাশা এলাকার সুলু বাড়ির শাহ আমিনের ছেলে ও মোঃ মোস্তফা হলেন- একই থানাধীন দামপাড়া সুন্দরবন মোড় এলাকার রফিক বাড়ির মোঃ শফিকুল ইসলামের ছেলে। নগরীর হালিশহর এ ব্লক এলাকা থেকে রাবেয়াকে জবাই করে হত্যা করার কাজে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।
১৭ জানুয়ারী (মঙ্গলবার) দুপুরে নগরীর হালিশহর থানায় সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “নিহত রাবেয়ার সঙ্গে এক বছর আগে গ্রেফতার জামিলের বিবাহ হয়েছিল। রাবেয়ার ১ম সংসারে ২ কন্যা রয়েছে। এক সময় রাবেয়া গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। স্বামীর সন্দেহের কারনে ২ মাস আগে চাকরি ছেড়ে দেন।”
তিনি আরও জানান, সংসারে সচ্ছলতা আনার জন্য তার বাবার চায়ের দোকানের পাশে রাবেয়া রাস্তায় পিঠা বিক্রি করতেন। গত ১০ জানুয়ারি তার স্বামী জামিল একটি এনজিও থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য রাবেয়াকে স্বাক্ষর দিতে বলেন। তাতে স্বাক্ষর দিতে রাবেয়া অস্বীকৃতি জানান। এতে রাবেয়ার সাথে তার স্বামী জামিলের তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়। এরপর ১৪ জানুয়ারি দুপুরের দিকে কাজ শেষ করে হালিশহর পাবলিক স্কুলের মোড়ে জামিল ও তার ভগ্নিপতি মোস্তফা মিলে ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা মতে একই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ছুরি নিয়ে জামিল ও মোস্তফা বাসায় ঢুকেন। এ সময় তার মেয়ে মিম আক্তার জান্নাতকে ঘরের ভিতর দেখতে পেয়ে বাইরে চলে যেতে বলেন। তখন জান্নাত ঘর থেকে বের হয়ে তার নানার চায়ের দোকানে চলে যায়। জান্নাত তার নানাকে জানায় যে, “তার বাবা ছুরি নিয়ে ঘরে ঢুকে তাকে বের করে দিয়েছে।”
রাবেয়া রান্নাঘরে নাশতার জন্য ঢুকলে এসময় মোস্তফা রাবেয়াকে ঝাপটে ধরে ফেলে দেয়। তখন জামিল তার স্ত্রী রাবেয়ার গলায় ও শরীরে ছুরিকাঘাত করে। এসময় জামিলের হাত থেকে ছুরি কেড়ে নিয়ে রাবেয়ার গলায় কয়েকবার ছুরি পোচ মারে। তখন ঝাঁপটা মেরে ছুটে রাবেয়া দৌড়ে তার বাবার চায়ের দোকানের সামনে রাস্তায় পড়ে যায়। এ সময় জাশিল ও মোস্তফা দেয়াল টপকিয়ে দৌড়ে খালের দিকে পালিয়ে যায়। ১৪ জানুয়ারি রাবেয়া আক্তার খুন হওয়ার ঘটনায় এ দিন রাবেয়ার বাবা মোঃ আবদুল মালেক বাদী হয়ে নগরীর হালিশহর থানায় হত্যা মামলার দায়ের করেন।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হালিশহর পুলিশ কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোঃ জামিলকে গ্রেফতার করে। নগরীর হালিশহর এলাকা থেকে জামিলের ভগ্নিপতি মোস্তফা গ্রেফতার করে পুলিশ।