বগুড়া প্রতিনিধি:

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পির সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচার করেই দেশে নির্বাচন করতে হবে। বিচারের আগে কোনো নির্বাচন দেশের জনগণ মেনে নেবে না। একই সঙ্গে তিনি ইসলামবিরোধী নারী নীতিমালা বাতিল, শাপলা ও জুলাই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, দুর্নীতিবাজদের বিচার এবং নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, ইসলামি হুকুমত কায়েম করার দাবি জানিয়েছেন।

শুক্রবার বিকালে বগুড়া শহরের সাতমাথায় মুক্তমঞ্চে গণসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

চরমোনাই পির বলেন, নারী সংস্কার কমিশন ও নারী নীতিমালা কুরআন-হাদিসের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। এতে বলা হয়েছে, সব উত্তরাধিকার নিশ্চিতকরণে মুসলিম ও হিন্দু উত্তরাধিকার আইন সংশোধন করা জরুরি। অথচ পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- একজন পুরুষের জন্য আছে দুটি নারীর সমান অংশ। আরও বলা হয়েছে- শরীর আমার সিদ্ধান্ত আমার; অপরদিকে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে সতর্ক হও! সৃষ্টি ও আদেশ একমাত্র তারই (আল্লাহর)। নারী নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে- শ্রম আইনে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে। এতে যৌনকর্মীকে স্বাভাবিক শ্রমিক হিসেবে দেখানো হয়েছে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ব্যভিচারী নারী ও পুরুষকে কঠোর শাস্তি প্রদান করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারকে মানবিক করিডোরের প্রস্তাব প্রকৃতপক্ষে রাখাইন ও পার্বত্য অঞ্চলকে একটি খ্রিস্টান রাষ্ট্র বানানোর সাম্রাজ্যবাদীদের পাঁয়তারা। অথচ ১৩ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমানকে মিয়ানমারকে ফেরত পাঠানোর জন্য জাতিসংঘ কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইল যে মানব ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বরতা চালাচ্ছে জাতিসংঘ কাগুজে বিবৃতি ছাড়া ইসরাইলকে বিরত রাখার জন্য কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

রেজাউল করীম বলেন, মোদি সরকার ভারতে মুসলমান, মাদ্রাসা এবং মসজিদের ওপর যে চরম নির্যাতন ও ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায় সম্পূর্ণভাবে নীরবতা পালন করছে।

সংস্কার ও নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, সংস্কার ও নির্বাচন উভয়ই জরুরি, তবে নির্বাচন যখনই হোক না কেন তার পূর্বে সংস্কার অতীব জরুরি।

মাওলানা আ ন ম মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- নায়েবে আমির আল্লামা আব্দুল হক আজাদ, সংগঠনের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ নূরুন নবী, বগুড়া জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, জেলা সহসভাপতি প্রভাষক মীর মাহমুদুর রহমান চুন্নু, জেলা সেক্রেটারি সহকারী অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম শফিক, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মতিন, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সভাপতি মাওলানা আলতাব আলী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহা. ফরহাদ হোসেন মন্টু, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুহা. সোহরাব হোসেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুহা. সোহেল রানা প্রমুখ।