ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
সাভারে স্বামীর নির্যাতনে নিহত ফারিয়া হাসান ইতির নিথর দেহটি সাড়া কাপড়ে মুড়িয়ে শনিবার রাত ১০টায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের সতিষা গ্রামে পৌঁছে। রাত সাড়ে ১১টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়।অথচ এ বাড়ি থেকেই গত ৮ ডিসেম্বর রঙিন শাড়ি আর মেহেদি রাঙা হাতে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ইতি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মো. আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় তার স্বামী মো. শাকিরুল হক শুভকে গ্রেফতার করেছে সাভার থানা পুলিশ।
রোববার আদালতে পাঠানোর পর শুনানি শেষে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন মডেল থানার ওসি শাহ জামান।
ইতির বাবা অভিযোগ করেন, সকাল ৮টা থেকে তার ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলছিল। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ওর মাকেও কল দিয়েছিল। সেখান থেকে সে চলে আসতে চেয়েছিল। তাকে আসতে দেওয়া হয়নি। মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন, ঘাড়ে ৩টি ইনজেকশনের সুইয়ের দাগ, হাতে ব্লেড দিয়ে কাটা ক্ষত চিহ্ন রয়েছে, বাম হাত ভাঙা, কানের একাংশে কালো দাগ রয়েছে।
শুভর বাবা গৌরীপুর উপজেলার বালুয়াপাড়ার গোলাম মোহাম্মদ খান পাঠান (ডা. রায়হান) এই প্রতিনিধিকে জানান, তার পুত্রবধূ আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনেও এ তথ্য এসেছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর শুভর সঙ্গে ইতির বিয়ে হয়। ইতি গৌরীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে এসএসসি ও ২০১৮ সালে রাজবাড়ী নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা পাশ করে। বর্তমানে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বিয়ের পর থেকে সাভারের তালতলা বেকারি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে ইতি টানা ৩ দিনের ডিউটি শেষ করে বাসায় ফিরেন। সকাল ১০টার দিকে তার মা পারভীন আক্তারের সঙ্গে শেষ কথা হয়। ওই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জানতে পারেন তার মেয়ে অসুস্থ, পরে জানতে পারেন তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।