April 19, 2024, 6:40 am
ব্রেকিং নিউজ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে কথা নয় : মির্জা ফখরুল

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Monday, March 27, 2023
  • 60 দেখা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা কথা বললে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে কথা বলবেন, অন্য কোনো বিষয়ে নয়। সোমবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক মুক্তিযোদ্ধা গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘এই সরকার নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আবার নাটক করে। নির্বাচন কমিশন সংলাপের জন্য আমাদের চিঠি পাঠায়। আমরা তো বলেছি, সংকট একটাই—নির্বাচন কীভাবে হবে, কোন ব্যবস্থায় হবে। নির্বাচন অবশ্যই একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কথা বললে সেই বিষয়ে কথা হবে, অন্য কোনো বিষয়ে কথা নয়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিতে চাই, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।’

সমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তৎকালীন জাতীয় নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজকের ক্ষমতাসীন সরকার তাদের নাম উচ্চারণ করে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের কথা আজ তারা উচ্চারণ করে না। হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী, মাওলানা ভাসানীর নাম একবারও উচ্চারণ করে না। এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী, যুদ্ধকালীন যিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন, সেই তাজউদ্দীন আহমদের নাম এরা উচ্চারণ করে না। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশবাসীকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছিলেন, সেই জিয়াউর রহমানের নাম তো উচ্চারণই করতে চান না, উপরন্তু বিভিন্ন রকমের অপবাদ দেন। তারা মনে করেন, তারা (ক্ষমতাসীন দল) একাই দেশ স্বাধীন করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ যুদ্ধ করেনি।’

সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘খুব বড়াই করে বলে, অর্থনীতি নাকি অত্যন্ত ভালো হয়েছে। একটা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, অর্থনীতি তো নয়, এটা হচ্ছে অনর্থনীতি। এই অনর্থনীতি আজকে বাংলাদেশে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। যত রকমের দুর্নীতি আছে, যত রকমের চুরি আছে, টাকা পাচার করার কৌশল আছে— সেগুলো বের করে নিয়ে তারা বিদেশের টাকা পাচার করে। কানাডা, সিঙ্গাপুর বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি করে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রায়ই বলেন উনি, আমরা এত উন্নতি করলাম, এদের চোখে পড়ে না? আরে উন্নতি চোখে পড়বে কোথায়, আমার পেটের কী উন্নতি হচ্ছে, সেটাই তো আমি বুঝতে পারি না, মানুষ বুঝতে পারে না। ঘর দিচ্ছেন উনি, সেই ঘর দুই দিন পরে ভেঙে পড়ে যায়। বিশাল উন্নয়ন করেছেন, পদ্মা সেতু করেছেন, খুব ভালো কথা। কিন্তু পদ্মা সেতু ১০ হাজার কোটি টাকা থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে গেছেন। এখন আবার রিপেয়ার (মেরামত) শুরু করেছেন এক বছর যেত না যেতেই।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার খুব বড় বড় কথা বলে, প্রবৃদ্ধি হচ্ছে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। আরে প্রবৃদ্ধিটা কোথায় হচ্ছে। প্রবৃদ্ধি হচ্ছে আপনাদের। কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন, কেউ দোতলা বাড়ি ছিল, পাঁচতলা বানিয়েছেন। কারও বাড়ি ছিল না, তারা ১০তলা বাড়ি বানিয়েছেন। সেইখানে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।’

আক্ষেপ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমন একটা খাত নেই, যেখানে চুরি হচ্ছে না। পাতাল রেল আমার এই মুহূর্তে দরকার নাই, লাগবে ভবিষ্যতে। আমার এই মুহূর্তে দরকার স্বাস্থ্য খাতে, হাসপাতালে উন্নয়ন—যাতে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পায়। দরকার শিক্ষায়, ছেলেমেয়েরা যাতে উচ্চশিক্ষা লাভ করতে পারে। আজ শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘১৯৭২ সালে একইভাবে তারা লুটপাট করেছে, দুর্নীতি করেছে। এমনকি তখন শিশুর জন্য যে পাউডার মিল্ক বিদেশ থেকে এসেছিল, সেই পাউডার মিল্ক পর্যন্ত তারা চোরাচালান করেছে। এবং তার প্রতিবাদে যারা দাঁড়িয়েছে, তাদের তারা হত্যা করেছে। সেদিনও র‍্যাবের মতো আরেকটা বাহিনী তৈরি করেছিল রক্ষাবাহিনী। সেই রক্ষীবাহিনী দিয়ে ৩০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা, তরুণ কিশোরকে হত্যা করেছিল। সেই বাংলাদেশে আমরা চাইনি। কিন্তু সেই বাংলাদেশকে আবার আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।’

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102