April 18, 2024, 1:43 am
ব্রেকিং নিউজ

বাঁশবোঝাই ট্রলি দিয়ে সড়কে ১ ঘণ্টায় অর্ধশতাধিক গাড়িতে ডাকাতি

রিপোর্টারের নাম:
  • আপডেট টাইম Friday, March 24, 2023
  • 75 দেখা হয়েছে

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

নিয়ামতপুরের আড্ডা-সরাইগাছী রোডের তাঁতড় মোড় এলাকায় বুধবার দিবাগত রাতে এক দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা একটি বাঁশবোঝাই ট্রলি গাড়ি দিয়ে সড়ক অবরোধ করে ডাকাতি করে।

ঘণ্টাব্যাপী এ ডাকাতি চলাকালীন ডাকাতরা বিভিন্ন যানবাহন থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণের গহনা ও মোবাইল ফোন লুট করে। এ সময় একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে সাপাহার থেকে নিয়ামতপুরে বাড়ি ফেরার পথে ঘটনার শিকার হন যুগান্তরের নিয়ামতপুর প্রতিনিধি রেজাউল ইসলাম সেলিম।

তিনি ডাকাতদের তৈরি ব্যারিকেডে আটকা পড়ে জানতে পারেন অপর গাড়িগুলোতে ডাকাতি চলছে। এ সময় তিনি কৌশলে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে বিষয়টি পোরশা থানায় জানান। এ সংবাদে ২০-২৫ মিনিটের মধ্যে থানার ওসি সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত স্থানে আসেন।

পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা দ্রুত পার্শ্ববর্তী আমবাগানে সটকে পড়ে। তখন রাত প্রায় ১১টা। ডাকাতদের ব্যারিকেডের উভয়পাশে আটকা পড়ে শতাধিক যানবাহন। পরে পুলিশি সহায়তায় যানবাহনগুলো ধীরে ধীরে গন্তেব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

ওই ঘটনায় ডাকাতির শিকার হন ট্রাক ড্রাইভার জাহিদ। তিনি জানান, সোনা মসজিদ থেকে পাথর নিয়ে কুড়িগ্রাম যাচ্ছিলেন। ডাকাতের সৃষ্টি করা ব্যারিকেডে আটকা পড়েন তিনি। এ সময় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোশ পরা ৮-১০ জন ডাকাত অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার কাছ থেকে নগদ ১২ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন লুট করে নেয়।

চেঁটামেচি বা পালানোর চেষ্টা করলে জবাই করা হবে বলে শাসায় তাকে। পর্যায়ক্রমে পেছনে আটকাপড়া ট্রাক, ভটভটি, মাইক্রোবাস ও বড় বাসে ডাকাতি কার্যক্রম চালায় তারা। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে চলে ডাকাতি। এ সময় ৪০-৫০টি যানবাহনে থাকা যাত্রী ও ড্রাইভারদের কাছ থেকে নগদ অর্থ, মোবাইল ও স্বর্ণের গহনা লুট করে ডাকাতরা এবং প্রচুর মারধরও করে যাত্রীদের।

ডাকাতদের কবলে পড়েন পোরশা উপজেলা দৈনিক মাতৃজগতের প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম। মাইক্রোবাস যোগে বোনকে নিয়ে রাজশাহী থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। তার কাছ থেকে নগদ অর্থ ও বোনের কানের স্বর্ণের দুল লুটে নেয় ডাকাত দল।

রাতে পুলিশি টহল না থাকায় এমন সুযোগের সৃষ্টি হয়েছে ডাকাতদের। আর এজন্য পুলিশের ব্যর্থতাকেই দায়ী মনে করছেন তিনি।

ঘটনার শিকার হন গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা শ্রী মিকান সরকার। বাড়ি মহিষাবাথ। জরুরি প্রয়োজনে সরাইগাছি মোড় থেকে পরিবারের সদস্যর জন্য ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন।

তিনি জানান, মাঝে-মধ্যেই এখানে সড়ক অবরোধ করে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এমন ঘটনায় প্রতিদিন রাতে পুলিশ টহলের কথা থাকলেও পুলিশের তৎপরতা তেমন চোখে পড়ে না তাদের।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই সড়কের দুধারে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে গড়ে উঠেছে আমের বাগান। এ কারণেই ডাকাতরা খুব সহজেই ডাকাতি করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারে। তখন পুলিশের আর কিছু করার থাকে না।

অনেকেই মন্তব্য করছেন, সড়কের ধারের এসব বাগানের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রশাসনের উদ্যোগে ওই বাগান এলাকায় নাইট ডিউটির ব্যবস্থা করা হোক। এতে সড়কে ডাকাতি কমবে বলে মনে করেন তারা।

ওসি জহুরুল ইসলাম জানান, এমন ঘটনা রোধে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের শিগগিরই আটক করা হবে।

এ ঘটনার পরপরই রাতে ওই সড়কে দেখা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর রোড়ের দাদপুরে চলছে পুলিশি তল্লাশি। এরপর নাচোল রোডের ধানসুরা মোড়েও বসেছে পুলিশের তল্লাশি চৌকি। প্রতিটি যানবাহনের কাগজপত্র ও বিভিন্ন তথ্য নিয়ে তবেই তাদের ছাড়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন
এই ধরনের আরও খবর...
themesba-lates1749691102