মমিনুল ইসলাম মোল্লা:
ইসলামের নামে যেসব অনৈসলামী কর্মকাণ্ড সমাজে প্রচলিত, তার একটি হচ্ছে আশূরার নামে বিদ‘আতি ও শিরকী অনুষ্ঠান পালন। অথচ হিজরী সনের প্রথম মাস মুহাররমের ১০ তারিখ ‘আশূরা’—এ দিন মূলত মূসা (আঃ)-এর নেতৃত্বে বনী ইসরাঈলের মুক্তির স্মৃতি বহন করে। আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এই দিনে ছিয়াম রাখা ছিল সুন্নাহ। রাসূল (ছাঃ) নিজেও এ দিন ছিয়াম রাখতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকেও তা রাখার উৎসাহ দিতেন।
কিন্তু কালের আবর্তে কারবালার ঘটনা ও হুসায়েন (রাঃ)-এর শাহাদাতকে কেন্দ্র করে সমাজে আশূরার নামে গড়ে উঠেছে নানা বিদ‘আত ও কুসংস্কার। যেমন: তা‘যিয়া মিছিল, মাতম, কবর সাজানো, মোরগ ছাড়া, কেক-পিঠা বিতরণ, এমনকি শোকের নামে নারী-পুরুষের অশোভন আচরণ পর্যন্ত। এসবই ইসলামের মূল চেতনার পরিপন্থী। ইসলাম শোক পালনের নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ করেছে—তিন দিনের বেশি নয়, আর কোন চিৎকার, ছেঁড়া জামা, বুক চাপড়ানো ইত্যাদি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
ইতিহাস বলছে, কারবালার ঘটনার তিন শতাধিক বছর পর প্রথমবার ১০ মুহাররমকে ‘শোক দিবস’ ঘোষণা করা হয়। তারপর থেকেই শুরু হয় শোকের নামে বিদ‘আত ও অপসংস্কৃতির চর্চা। বাংলাদেশেও এর প্রভাব রয়েছে। নবাবদের শী‘আ-ঘেঁষা নীতির কারণে আমাদের সমাজে এসব কুসংস্কার স্থান পেয়েছে।
তাই আমাদের উচিত, এ দিনের প্রকৃত শিক্ষা থেকে উপকৃত হওয়া। শুধুমাত্র ৯ ও ১০ অথবা ১০ ও ১১ মুহাররম নফল রোজা রাখা এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করাই এই দিনের প্রকৃত করণীয়। সেই সাথে ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি না করে বিশুদ্ধ ইসলামের অনুসরণ করা জরুরি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হক বুঝে তা অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন— আমীন।
📌 লেখক : মমিনুল ইসলাম মোল্লা, ধর্মীয় গবেষক , শিক্ষক এবং সাংবাদিক