গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জে স্কুলের সভাপতি কর্তৃক শিক্ষকদের গালাগালির প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেছেন শিক্ষকরা। কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান তালুকদার চঞ্চলের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের গালাগাল করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে রবিবার (২ জুন) শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করেন।
জানা যায়, রবিবার (২ জুন) স্কুল চলাকালীন সময়ে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান তালুকদার চঞ্চল বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক জিএম আরিফকে গালাগালি করেন।
ইংরেজি শিক্ষক জিএম আরিফ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান তালুকদার চঞ্চল বিদ্যালয়ে এসে ইংরেজি বিষয়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ফলাফল সম্পর্কে জানতে চান। এ বিষয়ে তার সাথে আমার কথা হয়। এক পর্যায়ে সে উত্তেজিত হয়ে আমাকে গালাগালি করেন। এ সময় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন বারুরী সভাপতি কামরুজ্জামান তালুকদার চঞ্চলকে শান্ত করার চেষ্ট করলে তিনি প্রধান শিক্ষককেও গালাগাল করেন। এ ঘটনা বিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করেন। আমরা বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক অফিসারকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান তালুকদার চঞ্চল বলেন, প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন বারুরী দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। তাকে এ কাজে সহযোগিতা করছেন বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। আমি সভাপতি হয়ে দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করি। ফলে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিচ্ছে। প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদের অনিয়ম ও দুর্নীতির যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে আছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষকরা ক্লাস বর্জন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে চলে যাওয়ার কারণে আমরা বাড়ি চলে গিয়েছি।
প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন বারুরী বলেন, আমি কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত নেই। সভাপতি কামরুজ্জামান তালুকদার চঞ্চল আমিসহ অন্যান্য শিক্ষকদের গালাগালি করার কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সিদ্দিক নূর আলম বলেন, প্রধান শিক্ষক নিহার রঞ্জন বারুরী বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা হবে। যদি সে তদন্তে দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সাথে সাথে বিদ্যালয়টিতে যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করার চেষ্টা করবো।