মুহাম্মদ শাহেদ রাহমান, লন্ডন (যুক্তরাজ্য) থেকে
বাংলাদেশের কিংবদন্তি সাংবাদিক ও কলামিস্ট, অমর একুশের গানের রচয়িতা প্রয়াত আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী স্মরণে যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের ব্রাডি সেন্টারে হৃদিকটানে সমবেত হয়েছিলেন যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক সুধীজন।
শিল্পী-সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশায় সম্পৃক্ত গুণীজন এবং বাঙালি কমিউনিটির বিপুলসংখ্যক মানুষ এ স্মরণসভায় উপস্থিত হয়ে শ্রদ্ধায় নত হয়েছেন বাঙালির অন্যতম সূর্যসন্তান আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর প্রতি।
শনিবার (১ অক্টোবর) লন্ডনে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী নাগরিক স্মরণসভা কমিটি যুক্তরাজ্যের উদ্যোগে আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন বিলেতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, প্রবীণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সুলতান শরীফ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১ মিনিট নীরবতা পালন ও মোমবাতি প্রজ্বালন করে প্রয়াত আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সংস্কৃতিকর্মী মুনীরা পারভীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, সত্যবাণী সম্পাদক সৈয়দ আনাস পাশা। এ নাগরিক আয়োজন বিষয়ে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক জুয়েল রাজ।
স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন- কবি শামীম আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক আবু মুসা হাসান, জনমত সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশা, ভয়েস অব আমেরিকার সাবেক সাংবাদিক শামীম চৌধুরী, বিবিসি বাংলার প্রাক্তন সাংবাদিক উদয় শংকর দাশ, জনমতের সাবেক সম্পাদক নবাব উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট হাবিব রহমান, লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি হরমুজ আলী, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির যুক্তরাজ্য সভাপতি সৈয়দ এনামুল ইসলাম, ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি সাংবাদিক মতিয়ার চৌধুরী, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব বুলবুল হাসান, কাউন্সিলার সায়েমা আহমেদ, কবি ময়নুর রহমান বাবুল, অজন্তা দেব রায়, যুক্তরাজ্য জাসদ সভাপতি হারুনুর রশীদ, ৭ই মার্চ ফাউন্ডেশনের নুর উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক আ স ম মাসুম, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, ইউকে বাংলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্য জামাল খান ও বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এস এম জাকির হোসেন প্রমুখ।
স্মরণ সভায় উপস্থিত হয়ে আবদুল গাফফার চৌধুরীর মেয়ে তনিমা চৌধুরী বলেন, আমার বাবা সারাজীবন বাংলাদেশ ও আদর্শের কথা লিখেছেন। তিনি যেমন বাংলাদেশের অভিভাবক ছিলেন তেমনি অসাধারণ বাবাও ছিলেন।
বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) জাহিদুল ইসলাম।
সভায় আবদুল গাফফার চৌধুরীর শেষ বিদায়ের ওপর বিখ্যাত তথ্যচিত্র নির্মাতা মকবুল চৌধুরী ও সাংবাদিক আ স ম মাসুম নির্মিত দুটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আবদুল গাফফার চৌধুরীর কবিতা আবৃতি করেন উর্মি মাজহার, মুনীরা পারভীন, স্মৃতি আজাদ। গাফফার চৌধুরীর লেখা গান পরিবেশন করেন শিল্পী হিমাংশু গোস্বামী, গৌরি চৌধুরী ও ফজলুর রহমান বাবু।
ঢাকা থেকে ভিডিওবার্তায় স্মরণসভায় সম্পৃক্ত হন অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম ও নাট্য ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। আবদুল গাফফার চৌধুরীর পছন্দের রবীন্দ্র সংগীত গেয়ে ভিডিওবার্তা পাঠান রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
সবশেষে ছিল সমবেত কন্ঠে আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা একুশের অমর গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি।'