হাকিকুল ইসলাম খোকন:শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছিলেন বাংলাদেশের একটি আদালত। শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ১ জানুয়ারী ২০২৪,সোমবার তাঁর বিরুদ্ধে এই দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল ।তবে নোবেল জয়ের আগে বা পরে কারাদণ্ড পাওয়া একমাত্র ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূস নন।
ড. ইউনূস ছাড়াও নোবেলজয়ীকে কারাদণ্ড দিয়েছে ভারত, বেলারুশ, মিয়ানমার, জার্মানি, চীন ও ইরান। তাঁরা হলেন—ভারতের অভিজিৎ ব্যানার্জি, ইরানের নার্গিস মোহাম্মদি, জার্মানির কার্ল ভন ওজিয়েতস্কি, মিয়ানমারের অং সান সু চি, চীনের লিও শাওবো এবং বেলারুশের আলেস বেইলিয়াৎস্কি।
মজার ব্যাপার হলো, অভিজিৎ ব্যানার্জি ছাড়া বাকি সবাই শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। অভিজিৎ নোবেল জিতেছেন অর্থনীতিতে।অভিজিৎ ব্যানার্জি, নার্গিস মোহাম্মদি, কার্ল ভন ওজিয়েতস্কি, অং সান সু চি, লিও শাওবো ও আলেস বেইলিয়াৎস্কি। ছবি: সংগৃহীতঅভিজিৎ ব্যানার্জি
অভিজিৎ ব্যানার্জি ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান। শিক্ষাজীবনে তাঁকে একবার জেলে যেতে হয়েছিল। সময়টা ১৯৮৩ সাল। তখন অভিজিৎ দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এমএ ক্লাসের শিক্ষার্থী। এক ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তাঁকে ১০ দিন কারাগারে কাটাতে হয়েছিল। তা-ও আবার ভারতের আলোচিত তিহার জেলে রাখা হয়েছিল তাঁকে।
নার্গিস মোহাম্মদি
ইরানের অধিকারকর্মী নার্গিস মোহাম্মদি ২০২৩ সালে শান্তিতে নোবেল পান। কিন্তু নোবেল পুরস্কার গ্রহণের জন্য তিনি অসলো যেতে পারেননি। কারণ, সে সময়টায় তাঁকে কারান্তরে কাটাতে হয়েছে। ইরান সরকার ২০২১ সাল থেকে তাঁকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে। এমনকি নোবেল জয়ের পরও তাঁর ওপর থেকে শাস্তির খড়্গ নামেনি।
কার্ল ভন ওজিয়েতস্কি
জার্মান নাগরিক সাংবাদিক কার্ল ভন ওজিয়েতস্কি ১৯৩৫ সালে শান্তিতে নোবেল জেতেন। কিন্তু তিনিও নোবেল পুরস্কার নিজ হাতে গ্রহণ করতে পারেননি। কারণ, সেই সময়টাতে তিনি নাৎসি বাহিনীর কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী ছিলেন। অবশ্য পরেও আর কোনো দিন তিনি সেই পুরস্কার হাতে পাননি। ১৯৩৯ সালে কার্ল বন্দী অবস্থায়ই মারা যান।
অং সান সু চি
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি ১৯৯১ সালে যখন নোবেল পুরস্কার পান তখন তিনি গৃহবন্দী। পরে কয়েক দফায় তিনি মিয়ানমারে সরকারও গঠন করেন। কিন্তু সর্বশেষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে। ২০২২ সালে দেশটির আদালত সু চিকে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।
লিও শাওবো
চীনের রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী লিও শাওবো ২০১০ সালে নোবেল জেতেন। এর আগেই তাঁকে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের দায়ে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল চীন সরকার। ২০১৭ সালে কারাবন্দী অবস্থায় ক্যানসারের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চীনেরই একটি হাসপাতালে।
আলেস বেইলিয়াৎস্কি
২০২২ সালে নোবেল জেতেন বেলারুশের অধিকারকর্মী আলেস বেইলিয়াৎস্কি। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের জুলাই মাসে তাঁকে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, এএফপি ও এনপিআর