তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি :
রংপুরের তারাগঞ্জে সংখ্যালঘু এক জেলে পরিবারের ক্রয়কৃত বসতভিটার জমি দখল নিতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ৫ম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ ৭ জন আহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার জেলে হরেন রায় ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের মাছুয়াপাড়া (জেলে) গ্রামে।
থানায় অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে হরেন পাকাঘরের কাজ করতে গেলে মৃত তমিজ উদ্দিনের ৭ ছেলে মমিনুর, তাজুল ইসলাম, কেচুয়া, মোস্তাকিন, সাবু মিয়া, মোকছেদুল ও সাইফুল মুন্সীসহ তাদের পরিবারের ২০-২২ জন সদস্য বাঁশের লাটি, লোহার রড়, দা, কুড়াল হাতে নিয়ে হরেন রায়ের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেন। এ সময় বৃদ্ধ হরেন (৭৯) ও তার স্ত্রী বৃদ্ধা শোভা রানী (৫৫) বাধা দিতে গেলে তাদের বেধড়ক মারধর করা হয়।
এ সময় হরেনের ভাই সুবোধ (৭৩), হরেনের ছেলে প্রতাপ (৩২), মাকড়া (২৮), ধনোকুল (৩৫) বৃদ্ধ বাবা মাকে বাঁচাতে এলে তাদেরও মারধর করা হয়। স্বামীকে বাঁচাতে ধনোকুলের স্ত্রী আধিকা (২৭) ও মেয়ে স্থানীয় কাজীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ শ্রেণির শিক্ষার্থী বিজলী (১২) এগিয়ে গেলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করে নগদ দুই লাখ টাকা, মোবাইলসহ অলংকার লুটপাট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয় রাজমিস্ত্রি রুস্তমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি হরেনের বাড়িতে পাকা ঘরের কাজ করছিলাম কিন্তু তারা দলবল নিয়ে এসে হরেনের বাড়িতে ও তার পরিবারের ওপর হামলার পাশাপাশি আমার ওপরও হামলা করে। তারা অকথ্যভাষায় গালমন্দ করেন।
তারাগঞ্জ থানার সামনে হরেন রায়ের সাথে কথা হলে তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, বেচারা তমিজ উদ্দিন এতদিন বাঁচি আছিলো কোন কিছু নাই। ওমরা (মৃত তমিজ উদ্দিন) গত বছর মারা গেলো এখন তার ছেলেরা হামার ওপর অত্যাচার করেছে।
অভিযুক্ত তমিজ উদ্দিনের ছেলে সাবু মিয়া ও তাজুল ইসলামের সাথে কথা হলে তারা হরেনের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের কথা অস্বীকার করে বলেন, আব্বা হরেনের কাছে ৬ শতক জমি প্রায় ৩০ বছর আগে বিক্রি করেছে এটা অস্বীকার করি না। কিন্ত জমির দাগ নং ভুল আছে তাই হামরা কছিনো জমির দাগ সংশোধন করি দেমো হামাক কিছু টাকা দেন; বিষয়টা চেয়ারম্যানও জানে।
সয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এবাদত হোসেন পাইলটের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তমিজ উদ্দিন হরেনের কাছে ৬ শতক জমি বিক্রি করেছেন কিন্তু জমির দাগ ভুল, তাহলে কিভাবে জমি হরেন পাবে। তাই দাগ সংশোধন না করা পর্যন্ত হরেনকে তার বসতভিটায় ঘর তুলতে বারণ করা হয়েছে।
তারাগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।