যশোর প্রতিনিধি:
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের বিরুদ্ধে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মোস্তাফিজুর রহমান মুকুলকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর শহরের পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়িতে ফুটপাত দখল নিয়ে দ্বন্দ্বের মীমাংসা করতে গিয়ে এই ঘটনা ঘটে।
তবে বিষয়টি সোমবার সন্ধ্যায় জানাজানি হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি।
অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল জানান, আইনজীবী সমিতির দ্বিতীয় ভবনের সামনের ফুটপাতে কিছু ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী টেবিল পেতে কাপড় বিক্রি করেন। সেখানে এক ব্যবসায়ীকে জোর করে উঠিয়ে অন্য একজনকে বসায় শাহীন নামে এক ব্যক্তি। এ সময় তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামের নির্দেশে তিনি এই টেবিল বসিয়েছেন। এটা কেউ উঠালে তার হাত কেটে নেয়া হবে। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের একটি পক্ষ পার্শ্ববর্তী পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দেন।
এরপর এসআই হেলাল মিমাংসার জন্য রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহীনসহ অন্য ব্যবসায়ীদের ডেকে পাঠান। একই সাথে আমাকেও ফাঁড়িতে ডেকে নেন। হঠাৎ করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন একদল যুবক নিয়ে ফাঁড়িতে আসেন। তিনি আমাকে ধান্দাবাজি করিস উল্লেখ করে মারপিট শুরু করেন। এক পর্যায়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ ঠেকিয়ে দেন।
মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল আরো জানান, লজ্জা, ঘৃণায় কাউকে কিছু না বলে বাড়ি চলে যান। কিন্তু মানুষজন ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে যায়। এরপর সোমবার তিনি লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিসহ সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতাদের অবহিত করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন সাংবাদিকদের বলেন, মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হিস্যা তুলে খায়। ২ নম্বর আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে ফুটপাতে দলের একজন কর্মী শাহীনকে দোকান বসানোর জন্য পাঠিয়েছিলাম। আমার নাম বলার পরেও মুকুল ওই কর্মীকে সেখানে দোকান বসাতে দেয়নি। উল্টো তারা পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ করে। ওই ছেলেকে ফাঁড়িতে নিয়ে দারোগাকে দিয়ে বেদম মারপিট করে। বিষয়টি জানার পর ওসি, এসপিকে জানিয়ে আমি ফাঁড়িতে যাই। পরে ওসি ও অ্যাডিশনাল এসপি ফোন দিয়ে আমাকে জানায়, যা হওয়ার হয়ে গেছে আপনি ছেলেটাকে নিয়ে যান। আমরা ওই দারোগার বিরুদ্ধে অফিশিয়ালি ব্যবস্থা নেব। এরপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল একজন আইনজীবী, আমি ওনাকে কেন মারতে যাবো?
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন বলেন, ফুটপাতের অবৈধ দোকানপাট বসানো নিয়ে দুই পক্ষের অভিযোগ ছিল। তাদেরকে ফাঁড়িতে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। এ সময় আওয়ামী লীগের দুই নেতার মধ্যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কিনা আমরা অবগত নই।
এই বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবু মোর্তজা ছোট বলেন, নিজ দলের নেতার কাছে নিজ দলের আইনজীবীর মারধরের শিকার হওয়া বিষয়টি দুঃখজনক। ভুক্তভোগী আইনজীবী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমরা বারের নেতৃবৃন্দ বসব।