বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নকল ওষুধ এন্টিবায়োটিক বাজারে ছড়িয়ে দিচ্ছে একটি চক্র। এসব ওষুধ খেয়ে রোগীরা সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে আরও অসুস্থ হয়ে পরছেন। অনেকে মৃত্যুবরণও করছেন। নকল ওষুধ বুঝতে পারার কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না ক্রেতারা। ভয়ংকর এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত এক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- শাহীন, শহীদুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, হৃদয় ও হুমায়ুন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে নিজ কার্যালয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
হারুন অর রশীদ বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে- শহীদুল দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল কোতোয়ালি থানার নথুল্লাবাদ এলাকায় নকল বিভিন্ন প্রকার এন্টিবায়োটিক মজুত করে আসছে। সে বিভিন্ন পরিবহণ ও গ্রেফতারকৃত শাহিনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় এসব এন্টিবায়োটিক বিক্রি করে আসছিল। গ্রেফতারকৃত হুমায়ুন অপসোনিন কোম্পানির বিক্রয়কর্মী হিসেবে চাকরি করার পাশাপাশি বিভিন্ন ফার্মেসিতে নকল এন্টিবায়োটিক বিক্রি করত। সিরাজুল ইসলাম ও হৃদয় নকল ওষুধের যাবতীয় কাজে বেশি মুনাফার জন্যে শহীদুলকে সহায়তা করে। উদ্ধার করা নকল ওষুধগুলো কুমিল্লার জনৈক আবু বক্কর তার কারখানায় তৈরি করে বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে শহীদুলের কাছে পাঠাত। শহীদুল এগুলো বাজারে সরবারাহ করত। এ ধরনের নকল ওষুধ সম্পূর্ণ আটা, ময়দা, সুজি ও বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি।
রোববার রাজধানী ও বরিশাল কোতোয়ালি থানা এলাকা বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১০টি কোম্পানির ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ পিস নকল এন্টিবায়োটিক উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রাজীব আল মাসুদ যুগান্তরকে বলেন, উদ্ধার হওয়া এন্টিবায়োটিকগুলোর বেশিরভাগই ঠাণ্ডা, কাশি, ব্যথা ও অস্ত্রপাচারের পর চিকিৎসকের পরামর্শে সেবন করেন রোগীরা। কিন্তু এসব নকল ওষুধ যখন কাজ করে না তখন রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পরে। মৃত্যুও হতে পারে এসব রোগীর। ভয়ংকর এ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা একাধিকবার গ্রেফতার হলেও জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার একই কাজ করছে।