জামালপুর প্রতিনিধি:
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এতে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে স্বল্প খরচে অধিক ফলন হবে বলে আশা কৃষকদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের নয়াপাড়া, খোলাবাড়ি ও চরাশুরিহাট এলাকায় অধিক ভুট্টা চাষ হয়েছে। ভুট্টা ক্ষেতে পানি ও কীটনাশক দেওয়া এবং বিভিন্ন পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষকরা। ক্ষেতেগুলোতে একদিকে পুরুষ শ্রমিক ও অপরদিকে নারী শ্রমিকরা কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার আট ইউনিয়নের পাঁচ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।
কৃষকরা বলছেন, ভুট্টা আবাদ লাভজনক হওয়ায় এবং স্থানীয় মাটিতে ভালো ফলন হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আগামী দুই সপ্তাহ কঠোর পরিশ্রম করে ফলন ঘরে তুলতে পারবেন তারা।
উপজেলার খোলাবাড়ি এলাকার ভুট্টা চাষি আমিনুল ইসলাম, রবিউল আলম, বশির শেখ ও ছামাদ মিয়া জানান, ভুট্টা চাষে আগে তেমন লাভ হতো না। গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টা চাষে ভালো লাভ হচ্ছে তাদের। হাইব্রিড জাতের ভুট্টা এক বিঘা জমিতে ৪৫ মণ হয়। আগে এক বিঘা জমিতে ২০-২৫ মণ ভুট্টা হতো। আগের থেকে এখন ভুট্টার দাম ভালো পাচ্ছেন তারা।
চিকাজানী ইউনিয়নের চরাশুরিহাট এলাকার ভুট্টা চাষি মহসিন মোল্লা, সুরুজ মিয়া, কাদের সেক ও রহমান মিয়া জানিয়েছেন, এখন যে জমিগুলোতে ভুট্টা চাষ করছেন সেগুলোতে আগে অন্য ফসল আবাদ করতেন। গত বছর তাদের হাইব্রিড জাতের ভুট্টার বীজ দিয়েছিল কৃষি অফিস। এরপর হাইব্রিড জাতের বীজ লাগিয়ে ভালো ফলন পান তারা। এখন ওই ভুট্টা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা। তাদের দেখে অন্যরাও ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন।
চিকাজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে ভুট্টা চাষ বেড়েছে। কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। আগে ভুট্টা চাষে তেমন লাভ হতো না কৃষকদের। বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ড সরকারের একটি প্রকল্পের লোকজন এই এলাকার কৃষকদের হাইব্রিড জাতের ভুট্টা চাষে সহযোগিতা করছেন। তাদের সহযোগিতায় কৃষকরা সফল হয়েছেন।’
আশা করছি এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আলমগীর আজাদ বলেন, ‘যমুনা নদীভাঙন ও বন্যাকবলিত এলাকার কৃষকরা যাতে ভুট্টা চাষ করে লাভবান হতে পারেন সেজন্য তাদের পরামর্শ দিয়েছি আমরা। স্বল্প খরচে যাতে উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারেন সে বিষয়ে তাদের দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।’