কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় শান্ত হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামী কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু কাউছার অনিকের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত।
সোমবার কুমিল্লার ৪ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা সুলতানার আদালতে প্রডাকশন ওয়ারেন্টের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এনে প্রথমে তাকে হত্যা মামলায় শ্যোন এরেস্ট করার জন্য দায়ের করা আবেদনের শুনানী শেষে তা মঞ্জুর করেন। পরে একই আদালতে তার জামিন আবেদনও না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী ও আইনজীবি।
মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট সৈয়দ তানভীর আহমেদ ফয়সাল জানান, ছাত্রলীগ নেতা আবু কাউছার অনিককে প্রডাকশন ওয়ারেন্টের মাধ্যমে কারাগার থেকে আদালতে এনে হাজির করে পিবিআইয়ের শ্যোন অ্যারেেেস্টর আবেদন মঞ্জুর করে এবং পাশাপাশি তার জামিনের জন্য আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করলে বিজ্ঞ বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বাদি নিহত মেহদেী হাসান শান্ত’র বাবা জাকির হোসেন সরকার জানান, অনিককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে জানতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আদালত আমাকে ন্যায্য বিচার পাইয়ে দিতে সহযেগেীতা করবে বলে প্রত্যাশা করছি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ আগস্ট সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচরের একটি আবাসিক হোটেলে এক গৃহবধ‚কে ধর্ষণের অভিযোগে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলার ৩ নম্বর আসামি উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু কাউছার। মামলার পর আবু কাউছার গা ঢাকা দেন। ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় কক্সবাজারের কলাতলী থেকে র্যাব সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেন। ২৫ সেপ্টেম্বর তাঁকে কুমিল্লার আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক তাঁকে সে সময় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত রোববার সকালে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবু কাউছার ওরফে অনিককে ধর্ষণের অভিযোগে দায়ের হওয়া ওই মামলায় জামিন দিয়েছেন কুমিল্লার ১ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী আব্বাস উদ্দিন। তাঁকে কোতোয়ালি মডেল থানায় সাপ্তাহিক হাজিরা দেওয়ার শর্তে জামিন দেওয়া হয়।
আবু কাউছারের আইনজীবী সৈয়দ তানভীর আহমেদ ফয়সাল আরো বলেন, ২৯ সেপ্টেম্বর দেবীদ্বারের নুরপুরের শান্ত হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় আবু কাউছারকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মো. তৌহিদুল ইসলাম। আদালত আজ তা মঞ্জুর করে কোর্ট ওয়ারেন্ট জারি করন। ফলে ধর্ষণের মামলায় শর্ত সাপেক্ষে জামিন পেলেও হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার (শ্যোন অ্যারেস্ট) দেখানো হয় পাশাপশি তার জামিন না মঞ্জুর করা হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবি এডভোকেট আবদুল হামিদ খান কবির খাঁন জানান, আসামী অনিকের পক্ষের কিছু লোক গতকাল রোববার দুপুরে আদালত চত্বরে বাদী পক্ষের লোকজনদের উপর হামলা চালানোর ঘটনায় আজ সোমবার সকালে কুমিল্লা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আগামীকাল এ মামলার শুনানী রয়েছে। আমরা শুনানীতে এ অভিযোগের বিষয়টিও আদালতের নজরে আনবো।
আবু কাউছারের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার নুরপুর গ্রামে। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৫ মার্চ পর্যন্ত তিনি কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।