কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ এলাকায় বিলের মধ্য থেকে দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাদের লাশ উদ্ধার করে দেবিদ্বার থানা পুলিশ।
নিহতরা হলেন- দেবিদ্বার উপজেলার জাফরগঞ্জ গ্রামের মৃত দুলু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২৫), অন্যজন হলেন খাগড়াছড়ি জেলার রামঘর উপজেলার সুখাকেন্দ্রায় গ্রামের রহুল আমিন মিয়ার ছেলে মোহন মিয়া (৩৫)। তারা ক্যাবল অপারেটর, লাইন সংযোগ ও মেরামতের কাজ করতেন।স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তবে কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, এটা কী হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এদিকে বিলের মধ্যে দুই যুবকের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে দূরদূরান্ত থেকে উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় করতে থাকেন। খবর পেয়ে নিহত মনির হোসেনের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মনিরের ছোট বোন জান্নাত আক্তার জানান, মনির আমার একমাত্র ভাই, তাকে কারা মারল আমরা বলতে পারব না। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে, তাদের এখন কী হবে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, মরদেহগুলো খড়ের ওপর পাওয়া গেছে, এর ২০/২৫ ফুট দূরে খড়ের একটি গাদা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাতের কোনো এক সময়ে তারা ওখানে থেকে খড় এনে এখানে বিছিয়ে আসন বানিয়ে ওখানে বসে মাদকসেবন করছিলেন। মাদকে হয়তো বিষাক্ত কিছু ছিল তা সেবনের পর শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে তারা মারা যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম বলেন, সকালে দোয়াইজলা বিলে কৃষকরা কাজ করতে এসে দুজনের মরদেহ দেখে আমাকে খবর দেয়। পরে ঘটনার সত্যতা পেয়ে পুলিশ খবর দেই। তারা দুইজনই ডিস ও ইন্টারনেট বিলে উত্তোলন ও সংযোগ লাইনের কাজ করতেন। এটি হত্যাকাণ্ড কিনা এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
ক্যাবল অপারেটর বদিউল আলম সানোয়ার বলেন, মনির ও মোহান আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। এর মধ্যে মনির নিজের বাড়িতে থাকত আর মোহন অফিসে থাকতেন। মোহনের বাবা আমাকে বলেছেন রাত ১১টার দিকে শেষবার মোহনের সঙ্গে তার কথা হয়েছে। ১১টার পর তাকে অফিসেও পাওয়া যায়নি।তারা কোনো নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করত কিনা জানতে চাইলে বদিউল জানান, দুজনের মধ্যে মনির মাদকাসক্ত; মোহন করত কিনা জানি না।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দেবিদ্বার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ মো. শাহীন জানান, আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, এটা হত্যাকাণ্ড নাকি অন্য কিছু তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঘটনাস্থল থেকে সিরিঞ্জ, সিগারেট, মোবাইল স্পিরিটের খালি বোতলসহ বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে এগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া আরও তথ্য উপাত্ত ও আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, তদন্ত চলছে, তদন্তের পরে বিস্তারিত বলা যাবে।