গাজীপুর প্রতিনিধি:
ঈদের বাকি আর মাত্র ৪ দিন। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে গ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন কর্মজীবীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে মহাসড়কে যাত্রীদের ঢল নেমেছে। এদিকে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে পরিবহণগুলোর বিরুদ্ধে। তবে বাড়ি ফেরার আনন্দে অতিরিক্ত ভাড়া মেনে নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে গাজীপুরের ঢাকা ময়মনসিংহ ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে মানুষ বাড়ি ফিরছেন। এই দুই মহাসড়কের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা ও চন্দ্রা স্টেশনে যাত্রী ও পরিবহণগুলো ভিড় করছে। গাজীপুরের কারখানাগুলোতে আজকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। যানজট এড়ানোর জন্য ঘরমুখো যাত্রীরা আগেভাগেই বাড়ি ফিরছেন। যাত্রীদের অনেকেই বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করলেও পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা তা অস্বীকার করেছেন।
শিল্প অধ্যুষিত গাজীপুরে ২ হাজার ১৭৬টি নিবন্ধিত কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন লাখ লাখ কর্মী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুরের অনেক কারখানা ছুটি হয়েছে। এর পর থেকেই মহাসড়কে যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় যাত্রীরা কাঙ্ক্ষিত গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে আছেন। তবে কোথাও কোনো যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। গণমানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করতে জেলা, মহানগর ও ট্রাফিক বিভাগ সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।
পরিবহণ মালিক ও শিল্প কারখানা সূত্র জানা গেছে, আজ থেকেই মহাসড়কে চাপ বাড়বে। কেননা আজ হতে কারখানাগুলো ধাপে ধাপে ছুটি হবে। কিছু কারখানা শুক্রবার বাকিগুলো শনিবার দুপুরের মধ্যে ছুটি হবে। বিকাল হতে যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে এটি আগামী শনিবার পর্যন্ত চলমান থাকবে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সাধারণ সময় থেকে অনেক বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদের। চন্দ্রা হতে সিরাজগঞ্জের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৪০০ টাকা।
ঢাকা এক্সপ্রেস পরিবহণের সহকারী মমিন বলেন, ঈদের সামনে একটু বেশি ভাড়া নেবে এটা মেনে নিতে হবে। ঈদের সময় যাত্রী বেশি থাকে, যানজট থাকে। সবমিলিয়ে স্বাভাবিক সময় থেকে ভাড়া তুলনামূলক বেশি হয়।
মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক কারখানা শ্রমিক বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর আমাদের কারখানা ১০ দিন ছুটি দিয়েছে। চন্দ্রা থেকে বগুড়া সাধারণ সময় যেসব গাড়ি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া, সেসব গাড়িতে আজ ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা নিচ্ছে। কেউ প্রতিবাদ করে না, করলেও লাভ হয় না।
নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের ওসি রইচ উদ্দিন বলেন, বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করছেন। অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ড. নজমুল করিম খান বলেন, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে যানজট নিরসনে মহাসড়ক দখলমুক্ত রাখা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধসহ সার্বিক নিরাপত্তায় জিএমপি পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত কাজ করছে। এছাড়া পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক দলও (ভলান্টিয়ার) সহায়তা করছে।
তিনি বলেন, ছিনতাই প্রতিরোধে সাদা পোশাকে কাজ করছে পুলিশ সদস্যরা। মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হবে। যানবাহন যেন চলন্ত অবস্থায় থাকে, রাস্তায় কোথাও থামা যাবে না। সামান্য থামলেই দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবার ৫০০ পুলিশ অফিসার কাজ করছেন। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন থেকে ভলান্টিয়ার সরবরাহ করা হয়েছে।