কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দির বরকোটা স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যক্ষের ফেরার খবরে স্থানীয়দের হামলায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে বরকোটা স্কুল অ্যান্ড কলেজ শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুপাশে ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ সময় ছাত্ররা যুবদল নেতা রুহুল আমিনের বিচার এবং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে স্লোগান দেন।পরে হাইওয়ে পুলিশের প্রচেষ্টায় ঘণ্টাব্যাপী চলা অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে বেলা ২টার দিকে শিক্ষার্থীরা দাউদকান্দি মডেল থানার সামনে জড়ো হন। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এসে জড়ো হন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দিন যুবদল নেতা রুহুল আমিনের নেতৃত্বে উপজেলার বরকোটা স্কুল অ্যান্ড কলেজে হামলা করে স্থানীয়রা। অধ্যক্ষ জসীম উদ্দিনের অপসারণ চেয়ে কলেজের পাঠাগার ভাঙচুর করা হয়। সেদিন থেকে ছুটিতে ছিলেন অধ্যক্ষ জসীম উদ্দীন।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) জসীম উদ্দীন কলেজে ফেরার খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা তাকে বরণ করে নিতে ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অধ্যক্ষকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না ঘোষণা দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন তরুণ লাঠি নিয়ে কলেজ এলাকায় মহড়া দিতে থাকেন। এ সময় ছাত্রদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে স্থানীয়দের হামলায় ১০ শিক্ষার্থী আহত হন।
আহত শিক্ষার্থীরা হলেন- সাজ্জাদ, দ্বীপ, ফয়সাল, মৃদুল, কামরান, সিয়াম, রিমন, তানভীর, ফয়সাল, জিসান, হামিদা, সাদিয়া, মনিকা, দিয়া, ইসরাত জাহানসহ কয়েকজন।
শিক্ষার্থী সাজ্জাদ, ইয়ামিন, জিসান বলেন, আমাদের প্রিন্সিপাল স্যার কলেজে আসবেন সেজন্য আমরা কলেজে যাই। কলেজে পৌঁছার আগেই রুহুল আমিনের লোকজন ও ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালসহ কয়েজন মিলে আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের ১৫-২০ জন সহপাঠী আহত হয়েছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ জসীম উদ্দিন বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমি ছুটিতে ছিলাম। আজ কলেজে যাওয়ার খবরে শিক্ষার্থীরা আমাকে বরণ করতে এলে স্থানীয় যুবদল নেতা রুহুল আমিনের ভাইসহ সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। আমি এ হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম এবং যুবদল নেতা রুহুল আমিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও রিসিভ করেননি।
দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাঈমা ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা শুনেছি। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।