
মমিনুল ইসলাম মোল্লা (স্টাফ রিপোর্টার) মুরাদনগর, কুমিল্লা :
মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মিত গ্রামীণ সড়কের পাশে নিয়মবহির্ভূতভাবে খাল, পুকুর ও নালা খননের কারণে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কগুলো। প্রশাসনের কঠোর নির্দেশনা থাকলেও মাঠ পর্যায়ে তা কার্যকর না হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভাঙছে রাস্তা, ভোগান্তিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার শুশুন্ডা সড়ক, পাহাড়পুর–পাঁচপুকুরিয়া সড়ক, নবীপুর–শ্রীকাইল সড়ক, চাপিতলা–বৃষ্ণপুর সড়ক, নহল চৌমুহনী–বাবুটি পাড়া সড়ক, মেটংঘর–শ্রীকাইল সড়ক, পীরকাশিমপুর–আন্দিকুট সড়ক ও দৌলতপুর–মাধবপুর সড়কের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার একদম পাশ ঘেঁষে খনন করা পুকুর ও খালের কারণে সড়কের মাটি ধসে পড়ছে। অনেক জায়গায় রাস্তার অংশ পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে; কোথাও কোথাও চলাচল প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সরকারি রাস্তার পাশে ১০ ফুটের ভেতরে কেউ পুকুর বা নালা খনন করতে পারেন না। খনন করতে হলেও অন্তত ১০ ফুট দূরে ৪৫ ডিগ্রি ঢাল (স্লোপ) রেখে মাটি কাটতে হবে। এছাড়া এই কাজে স্থানীয় প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। অনুমতি ছাড়া কেউ খনন করলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা জরিমানার বিধান রয়েছে।
সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি) এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সড়কের পাশে অনুমতি ছাড়া কোনো ধরনের খাল, পুকুর, নালা বা মাটি কাটার কাজ করা যাবে না। অনুমতি ব্যতীত এসব কার্যক্রম আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বারী বলেন, “সড়কের পাশে পুকুর বা নালা খননের কোনো বিধান নেই। মানুষ আইন অমান্য করে কোটি কোটি টাকার রাস্তা নষ্ট করছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে পুকুর খননের কারণে সড়কগুলো ভেঙে পুকুরে মিশে যাচ্ছে। অথচ এর দায় শেষ পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ারের ওপর চাপানো হয়।”
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, “সড়কগুলো রক্ষায় জনসচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদেরও দায়িত্বশীল হতে প্রশাসনিকভাবে বলা হয়েছে। সড়কের পাশে নিয়মবহির্ভূতভাবে পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”