আন্তর্জাতিক ডেস্ক:যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির সংসদ সদস্য (এমপি) এবং দেশটির নগর ও দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগ করেছেন। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় চাপের মুখে আজ মঙ্গলবার পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও শেখ রেহানার এ মেয়ে।
আজ নিজের ভ্যারিফায়েড এক্স অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টে পদত্যাগের তথ্য নিশ্চিত করেছেন টিউলিপ। পোস্টে পদত্যাগপত্রও যুক্ত করেছেন তিনি।
এর আগে, মন্ত্রী হিসেবে টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি সামাল দেওয়ার যে দায়িত্ব পালন করছেন, তা থেকে তাকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় দুর্নীতিবিরোধী দাতব্য সংস্থার জোট ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দুর্নীতির তদন্তে নাম এসেছে। বাংলাদেশে তার খালার প্রাক্তন শাসনামলে পরিবারের জন্য জমি অধিগ্রহণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ তদন্ত করা হচ্ছে।
ঢাকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাজধানীর কূটনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দের ঘটনায় তদন্তাধীন ব্যক্তিদের মধ্যে লেবার পার্টির দুর্নীতি দমন মন্ত্রী সিদ্দিকও রয়েছেন।
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দাবি করেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ‘তার প্রভাব এবং বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করে’ ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তার পরিবারের সদস্যদের জমি বরাদ্দের জন্য চাপ দিয়েছিলেন। তবে টিউলিপ সব দাবি অস্বীকার করেছেন। তারপরও তার ওপর এটি চাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।
টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগপত্র
এর আগে ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তিতে সুবিধা নেওয়ার অভিযোগে দুদকের একটি পৃথক তদন্তে ইতোমধ্যেই তার নাম উঠে এসেছে। অবশ্য মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো এই অভিযোগগুলোকে তার খালার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের ‘ছড়ানো’ বলে বর্ণনা করেছে।
টিউলিপের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তার পরিবার বাংলাদেশে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করেছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগ ব্রিটিশ রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু করে দিয়েছে।
এর আগে এই অভিযোগের আলোকে বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্ট নেতা কেমি ব্যাডেনকও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানান টিউলিপকে বরখাস্ত করতে। ইংল্যান্ডের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট আসনের ৪২ বছর বয়সী এমপি টিউলিপ সিদ্দিক নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর মানদণ্ড উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করেছেন এবং জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি কোনো অন্যায় করেননি। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী টিউলিপের ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ রেখেছেন।
তবে ইউকে অ্যান্টি-করাপশন কোয়ালিশন বলেছে, টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ সরকারে যে দায়িত্ব পালন করছেন এবং তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো স্পষ্টতই ‘স্বার্থের সংঘাত’।