অনলাইন ডেস্ক:
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা সিটি কলেজের অধ্যক্ষকে জোর করে বের করে দিয়ে কলেজটি দখলের অভিযোগ উঠেছে এক জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন কুমিল্লা মহানগরীর সহসভাপতি। গত সোমবার বিকালে কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকায় অবস্থিত ওই কলেজে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতেই সিসিটিভির একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এতে দেখা যায়, কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল হাসান চৌধুরীর কক্ষে প্রবেশ করেন জামায়াত নেতা ইফতেখার আলমসহ বেশ কয়েকজন। পরে তারা অধ্যক্ষকে গালমন্দ করেন এবং ধমকিয়ে কলেজ ছেড়ে যেতে বলেন। একপর্যায়ে তারা উদ্যতপূর্ণ আচরণ করে তাকে (অধ্যক্ষ) কক্ষ থেকে বের করে দেন।
এদিকে হামলাচেষ্টার অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ নাজমুল হাসান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নেতা ইফতেখার আলম, তার ভাই কাউসার আলম ভূঁইয়া, রূপসী বাংলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মঞ্জিল হোসেন ও একই কলেজের হিসাবরক্ষক ফরহাদ হোসেনসহ ৫-৬ জনের একটি দল কলেজ দখলের চেষ্টা করলে কর্তব্যরত কলেজের দারোয়ানরা প্রথমে কলেজের গেট খুলেননি। পরে পুলিশকে জানানো হলে তারা ঘটনাস্থলে এসে ইফতেখার তাদের সহযোগিতায় কলেজে প্রবেশ করেন। কলেজের নিজস্ব সমস্যার কথা বলে পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরেই তিনি (ইফতেখার) রুমে প্রবেশ করেন এবং কলেজ দখলের নানা পাঁয়তারা শুরু করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ইফতেখারের নির্দেশনা না মানায় কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে চড়থাপ্পড় মারতে একাধিকবার হাত তোলেন এবং গালমন্দ করে তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেন।
কুমিল্লা সিটি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারি সেলিম রেজা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকেই রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আসছেন ইফতেখার আলম। এর আগে বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৩ সালে তাকে কুমিল্লা সিটি কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া তিনি এবং অ্যাডভোকেট আরিফুজ্জামানসহ বেশ কয়েকজন সদস্য বাদী হয়ে ইফতেখার আলমের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ এনে কুমিল্লা আদালতে একটি মামলা করেন। ওই মামলা হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়ালে ইফতেখার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করেন এবং তাকে কলেজে তার শেয়ারের টাকা ফিরিয়ে দিলে এর সদস্য হিসেবে দাবি করবেন না সেই শর্তে তাকে ৩৩ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে এসে আওয়ামী লীগের আমলে তাকে জোরপূর্বক কলেজের সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে ইফতেখার বারবার রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে এটি দখলের চেষ্টা করছেন।
কুমিল্লা সিটি কলেজের অ্যাডহক কমিটির সভাপতি কর আইনজীবী কাউছার আহমেদ বলেন, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি আওয়ামী লীগ সরকার (ক্ষমতাচ্যুত) ক্ষমতায় আসার পর সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের নির্দেশে এটি আমাদের কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হয়। ৫ আগস্টের পর কলেজের মূল নিয়ন্ত্রক সমবায়কে চিঠি দিই । তদন্তের পর একটি অ্যাডহক কমিটি দিয়ে আমাকে সভাপতি করা হয়।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ইফতেখার আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। সূত্র-আমাদের সময়